মোঃ কাওসার, লন্ডন ।। জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে একটি বাস্তবসম্মত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাধান খুঁজে বের করার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বৈশ্বিক এবং আন্তঃসীমান্ত সমস্যা। কোনো দেশই এর ভয়াল পরিণাম থেকে সুরক্ষিত নয়।
সোমবার (১ নভেম্বর) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ-২৬ সম্মেলনের সাইডলাইনে ‘ক্লাইমেট প্রসপারিটি পার্টনারশিপ’ বিষয়ক সিভিএফ-কমনওয়েলথ উচ্চপর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ তাগিদ দেন।
এসময় প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল পরিণাম থেকে বাঁচাতে কমনওয়েলথ এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামকে (সিভিএফ) একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর সংগঠন সিভিএফ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ক্রমাগত জলবায়ু বিপর্যয় বাড়ছে। এর প্রভাব জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে অপরিবর্তনীয় ক্ষতির শেষ প্রান্তে নিয়ে এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৈশ্বিক খাদ্য, জ্বালানি, স্বাস্থ্য এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৬) যোগ দিতে রোববার গ্লাসগোতে পৌঁছেন। গ্লাসগোয় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের কনফারেন্স অব দ্য পার্টিজের (কপ) ২৬তম সম্মেলন ৩১ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৬) যোগ দিতে রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় এবং স্কটল্যান্ডের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে ৩টায় গ্লাসগো বিমানবন্দরে পৌঁছেন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।
এর আগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে করে রোববার সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করেন সরকারপ্রধান ও তার সফরসঙ্গীরা। প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমিত রাখা ও জলবায়ু তহবিলের কার্যকর বাস্তবায়নসহ তিনটি প্রস্তাব বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি শেখ হাসিনা এবারের জলবায়ু সম্মেলনে ঝুঁকির মুখে থাকা ৪৮ দেশের জোট ‘ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামেরও (সিভিএফ)’ নেতৃত্ব দেবেন।
করোনার কারণে এই সম্মেলন নির্ধারিত সময়ে এক ছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে বিশ্বনেতাদের মিলন মেলা স্কটল্যান্ডে। এতে ১৯৬ দেশের প্রায় ২৫ হাজার প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। দুই সপ্তাহের এই সফরে ফ্রান্সেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী, জলবায়ু সম্মেলনের পাশাপাশি অংশ নেবেন সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ বিতরণ এবং ইউনেস্কোর ৭৫তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে। বর্তমানে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এতে ভয়াবহ আকারে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড়, দাবদাহ ও খরা। এতে পরিবেশের সঙ্গে ধ্বংস হচ্ছে বাস্তুসংস্থান। ক্ষতিগ্রস্ত দেশেগুলোর তালিকায় অন্যতম বাংলাদেশ। বিশ্ব ব্যাংক বলছে, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশে বাসস্থান হারাবে ১ কোটি ৩৩ লাখের বেশি মানুষ।
72Share