বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরে আসছেন। এদিন তিনি লক্ষ্মীপুরে নদীভাঙ্গনে গৃহহীন মানুষের জন্য নির্মিত গণকবর ও মসজিদের কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। লক্ষ্মীপুরে এটি তার প্রথম সফর। লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক মঙ্গলবার সকালে প্রথমে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম চরমনসা গ্রামে নির্মাণ করা কবরস্থান ও মসজিদটির নামফলক উন্মোচন করবেন। এরপর লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করবেন তিনি। অনুষ্ঠানে পুলিশের সদর দপ্তর এবং চট্টগ্রাম রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
“মৃতদের কবর দেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় লক্ষ্মীপুরের নদী ভাঙ্গা হাজারো মানুষ” এমন শিরোনামে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরের একটি সংবাদ প্রচার করা হয়। উক্ত সংবাদটি নজরে আসে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক -আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদের। পরবর্তীতে পুলিশের আইজিপির নির্দেশে লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ খোঁজ খবর নিয়ে ওই ভাগ্যহত মানুষের জন্য কবরের জমি কেনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয় লক্ষ্মীপুর জেলা পুলিশ।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, লক্ষ্মীপুরে মেঘনা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার প্রায় অর্ধেক অংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে আরও বহু এলাকায় নদী ভাঙ্গছে। নদীতে ভিটে মাটি হারানো অসহায় বহু মানুষ রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের ভবানীগঞ্জ থেকে তোরাবগঞ্জ এলাকা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার পাশে ঘর তুলে কোনোমতে আশ্রয় নিয়েছে।
এইসব পরিবারের কেউ মারা গেলে কবর দেওয়ার জন্য কোনো কবরস্থান নেই। তাই তারা যেখানে-সেখানে লাশ দাফন করছেন। পরিবারের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে কবর দেওয়া নিয়ে সবসময় দুঃচিন্তায় ভুগতে হচ্ছিল তাদের। পরিজনকে হারিয়ে শোকের পরিবর্তে উল্টো কবর দেওয়ার দুর্ভাবনা পোহাতে হতো তাদের। তাদের এ খবরটি লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরে প্রকাশিত হলে এখন সেখানে পুলিশের আইজিপির পক্ষ থেকে একটি গণকবর ও মসজিদ তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান বলেন, মৃতদের কবর দেওয়া নিয়ে নদীভাঙা মানুষের দুশ্চিন্তার খবরটি লক্ষ্মীপুর২৪ এ প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী জমি কেনাসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে সেখানে কবরস্থান, মসজিদ, লাশ ধোয়ার ঘর ও নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে।
860Share