লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসার তিনটি পদে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় দূর্নীতি ও অর্থ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে ওই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠিতব্য পরীক্ষায় একজন সহ-সুপার, একজন নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন আয়া পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আয়া পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী তাছলিমা আক্তার নামে এক ভুক্তভোগী জানান, আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়ে চাকরির জন্য আবেদন করেন তিনি। আমার আবেদন পত্রটি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাস্টার রুহুল আমিনের নজরে আসলে তিনি তাছলিমা ডেকে চাকরি পেতে ১ লক্ষ টাকা দিলে চাকরি হবে বলে লোভ দেখান। এ বিষয়টি আমি আমার পরিবারভুক্ত অন্যান্য স্বজনদের জানালে, পরে তারা সভাপতির সাথে দেখা করে ৭০ হাজার টাকায় বিষয়টি মিমাংসা করেন। আমি স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় হওয়ায় আমার কাছে কোন টাকা পয়সা ছিলনা আমি স্বজনদের বাসা বাড়িতে কাজ করে তিন মেয়ে নিয়ে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করি।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, চাকরি হবে সুবাদে স্বজনরা মিলে স্থানীয় লগ্নি কারবারির কাছ থেকে অতিরিক্ত মুনাফার উপর ৭০ হাজার টাকা সংগ্রহ করি। পরবর্তীতে ওই টাকা স্বজনরা সভাপতির কাছে নিয়ে গেলে সভাপতি টাকাগুলো মাদ্রাসার সুপারেনডেন্ট মাওলানা আবু আবদুল্লা নুর মোহাম্মদ এর নিকট জমা রাখার জন্য বলেন। পরে তারা সুপারের কাছ টাকাগুলো রেখে আসেন। চাকরি নিশ্চিত হতে সুপার পরীক্ষার দুদিন আগে সম্ভাব্য মূলক প্রশ্ন সম্বলিত একটি প্রশ্নপত্র দেন, আমিও ওই প্রশ্নের আলোকে প্রস্তুতি নিয়েছি, কিন্তু পরীক্ষার দিন আমাকে হতবাক করে সভাপতিসহ অন্যরা মিলে সম্পূর্ণ অনিয়মের মাধ্যমে অন্য একজনকে প্রথম হয়েছে শুনিয়ে তাকে নিয়োগ দিয়ে দেন এতে আমি স্বর্বস্ব হারিয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় শিক্ষক জানান, সভাপতি ও সুপার মিলে শুধু তাছলিমার সাথে প্রতারনা করেননি, তারা সহ-সুপার পদে পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী মাওলানা আবুল কাশেমের সাথে ওই মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মিরাজ হোসেনের মাধ্যমে ৩ লক্ষ টাকা চুক্তি করিয়ে তার চাকরি নিশ্চিত করেন। পরে ওই টাকাগুলো মাদ্রাসার সুপারের নিকট জমা রাখেন। এভাবে ইতিপূর্বে ও বিভিন্ন সময় তারা অর্থ বানিজ্য করে নিয়োগ দিয়েছেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে।
চর পোড়াগাছা ছিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি মাস্টার রুহুল আমিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এ মাদ্রাসায় প্রথমে শিক্ষক ও পরে সভাপতি পদে প্রায় ৪২ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছি, এখন দেখছি সুনাম নিয়ে আর থাকা সম্ভব হচ্ছে না। নিয়োগ পরীক্ষা স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হয়েছে, ফলে যোগ্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। টাকা নেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। আনীত অভিযোগগুলো সঠিক নয়।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সচেতন মহল।
580Share