নিজস্ব প্রতিনিধি | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ বাজার সংলগ্ন এলাকার তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ক পাশের একটি খাল দখল হয়ে গেছে। এলাকাবাসী বাঁধা দিয়েও খালটি দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেনি।
বুধবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে খালের পাড়ে জিও ব্যাগে মাটি ভর্তি করে খাল দখল চালিয়ে যেতে দেখা গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ।
চর কালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট এলাকার ফারজানা আক্তার নামের এক নারী খালটি নিজের দাবি করে দখল অব্যাহত রেখেছে। দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা না থাকায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খালপাড়ে দাঁড়িয়ে দখল দেখা স্থানীয় নুরুল ইসলাম, সুজন এবং সোহাগ জানায়, মতিরহাট এলাকার মৃত বাবুল মেম্বারের মেয়ে ফারজানা আক্তার গত কয়েক বছর আগে তাদের পারিবারিক সকল সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। ২০২৩ সালে বিক্রিত ওই জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করে ক্রেতারা।
কিন্ত ওই বছরই ফারজানা আক্তার খালের মধ্যে পিলার নির্মাণ করে একটি অংশ দখল করে দোকান নির্মাণ শুরু করে। এমন স্থানীয়দের তথ্যের প্রেক্ষিতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে খাল দখলের সত্যতা পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে পাকা পিলার ভেঙে দেয়। ভবিষ্যতে খাল দখল করবে না মর্মে মুচলেকা দেন ফারজানার ছোট ভাই।
স্থানীয় নুরুল ইসলাম জানায়, চলতি বছরের গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে ফারজানা আবারো খালের মধ্যে পিলার নির্মাণ শুরু করে। এবারও প্রশাসনের বাঁধায় পিলার টি ওখান থেকে উঠিয়ে নেন। কিন্ত গত ২-৩ দিন থেকে জিওব্যাগে মাটি ভর্তি করে ৩য় বারের মতো খালটি দখল করে নিয়েছে ফারজানা।
স্থানীয়রা আরো জানায়, নিজের মালিকানাধীন জমি বিক্রি করার পর সে খালপাড়কে নিজের জমি দাবি করে মাটি ভরাট করেছে এবং খাল দখল করে নিয়েছে।
স্থানীয় মোশাররফ হোসেন জানায় এ খাল দিয়ে চর কাদিরা, তোরাবগঞ্জ এবং চর লরেঞ্চ ইউনিয়নের বিপুল সংখ্যক জমির পানি নিষ্কাশন হয়। কিন্তু এভাবে দখল করে ফেললে খালের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলনগর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ঝন্টু বিকাশ চাকমা জানান, খবর পেয়ে সাথে সাথে আমার একজন ইউনিয়ন ভূমিকর্মকর্তাকে পাঠিয়ে খাল দখল বন্ধ রাখতে বলেছি। খালপাড়ের ওই জমির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলার নদী ও খাল রক্ষা কমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি আবদুস সাত্তার পালোয়ান বলেন, গত বন্যা সময় লক্ষ্মীপুর জেলার খাল নদী দখলদার থেকে মুক্ত করার জন্য সুপ্রীম কোর্টের একটি আদেশ রয়েছে। কোন প্রশাসন যদি দখলদারদের বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয় তবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমরা ডকুমেন্টরী আদালতে উপস্থাপন করবো। এ জন্য জেলার সকল শ্রেনী পেশার মানুষ খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
114Share