লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার পশ্চিমচর কলাকোপা গ্রামে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ ) গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক কিশোরী (১৭)। তার পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণের বিচারের নামে সালিশে তাকে উলটা ভর্ৎসনা করেছিলেন গ্রামের মাতব্বরেরা। এই অপমান সইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন ওই কিশোরীর ।
এ ঘটনায় ধর্ষণ এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত মো. রাকিবসহ প্রতিবেশী ১২ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার দুপুরে রামগতি থানায় মামলা দায়ের করেছেন ঐ কিশোরীর মা। ইতিমধ্যে একই গ্রামের মো. হেলাল নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ।
ওই কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী মো. খবিরের ছেলে মো. রাকিবের সঙ্গে গত ছয়-সাত মাস ধরে তার প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছে। সম্পর্কের জের ধরে গত শনিবার দিবাগত গভীর রাতে তার বসতঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় কিশোরীর মা টের পেয়ে মেয়ের কক্ষে গেলে রাকিব পালিয়ে যায়। ইতিপূর্বে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে রাকিব কয়েক বার ধর্ষণ করেছে বলে তার মাকে জানায় কিশোরী। ঘটনাটি তাৎক্ষণিক রাকিবের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বারণ করে এবং কিশোরীকে রাকিবের বউ করে নিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন।
এনিয়ে পরের দিন এলাকায় জানাজানি হলে মো. হেলাল, মো. আজাদসহ অভিযুক্তরা গত মঙ্গলবার সালিশের আয়োজন করে। সেখানে মো. বাশার, জামশেদ উদ্দিনসহ অভিযুক্তরা ঐ কিশোরীকে চরিত্রহীনাসহ বিভিন্ন ধরনের অপবাদ দেয়।
বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে ফসল দেখতে যায় তার মা। এ সময় অভিযুক্ত হেলাল তাদের বাড়িতে গিয়ে কিশোরী ও তার মার চুল কেটে এলাকায় ঘুরাবে বলে হুমকি দিয়ে আসে। এতে মানসিক চাপে বেলা ১২টার দিকে বসতঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে কিশোরী।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন বলেন, এই ঘটনায় রামগতি থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রতিবেশী ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ওই কিশোরীর মা। ইতিমধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মো. হেলাল নামের একজনকে আটক করে ঐ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অপর অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
28Share