মিসু সাহা নিক্কন: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার অধিকাংশ জনগনের প্রধান যানবাহন অনিরাপদ সিএনজি। রামগতি পৌরসভা, চরবাদাম ও আলেকজান্ডার ইউনিয়নের জনগন নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে যাতায়তের জন্য বাস সার্ভিস থাকলেও বাকিরা সিএনজি নির্ভর। উপজেলার অধিকাংশ মানুষ বাস সার্ভিস থেকে বঞ্চিত, তাই তারা প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে সিএনজি দিয়ে যাতায়াত করছে। এসুযোগে সিএনজি চালকরা যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।
রামগতি বাজার থেকে সোনাপুরের কিছু বাস সার্ভিস থাকলেও পরিমানে অল্প, আবার অধিকাংশ সময় সার্ভিসটি অচল হয়ে যায়। প্রায় ভোগান্তির শেষ থাকে না সাধারণ যাত্রীদের। রামগতি বাজার থেকে লক্ষ্মীপুরে সবসময় যাওয়ার জন্য নেই কোন বাস সার্ভিস, বাধ্য হয়ে যাত্রীরা সিএনজি কিংবা লেগুনা দিয়ে আলেকজান্ডার যেতে হয়, সব চেয়ে বড় ব্যাপার হলো গভীর রাতে লক্ষ্মীপুর থেকে আলেকজান্ডার পর্যন্ত আসা গেলেও যাওয়া যাচ্ছে না রামগতি বাজারে। কেননা সন্ধ্যার পর যাত্রীবাহী সিএনজি সার্ভিসও বন্ধ হয়ে যায়, আর যাত্রীরা বেগ পেতে হয় অস্বাভাবিক পরিস্থিতির।
সম্প্রতি সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সায়েম মাহমুদ বলেন, আমরা অনেক আতঙ্কে রয়েছি। রামগতি বাজার থেকে নিরুপায় হয়ে সিএনজি যোগে সোনাপুর ও আলেকজান্ডার যাতায়ত করছি ঠিকই কিন্তু মানসিক শান্তি নেই। যাত্রাপথে দু:চিন্তায় থাকতে হয় কখন কি হয়। দ্রুত বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে এথেকে পরিত্রান চাই।
নোয়াখালী সরকারি কলেজের স্নাতক (পাস) কোর্সের ১ম বর্ষের ছাত্র মো: মাকসুদ জানান, রামগতি-সোনাপুর রোডের বাস সার্ভিসের অবস্থা নাজুক। সময়মত বাস না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে সিএনসি’র উপর ভর করে চলতে হয়।
আ স ম আবদুর রব সরকারি কলেজের বিএসএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অশ্রু সাহা জানায়, রামগতি বাজার থেকে কোন বাস সার্ভিস না থাকায় প্রায়ই পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। দীর্ঘদিন থেকে আমরা অবহেলীত, বাস ছাড়া অনিরাপদ যানে চলাচল করতে হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, আর দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত বাস সার্ভিস চালুর দাবী করছি।
রামগতি-সোনাপুর রোডের বাস চালক আবদুল মতিন বলেন, এক শ্রেণীর মানুষ সিএনজিতে চলাফেরা করাকে ক্রেডিট মনে করেন। যার ফলে বাসে যাত্রী কম হয়। তবে, সময়মত বাস সার্ভিস চালু হলে সাধারণ মানুষ বাসমুখী হবেন বলেও তিনি মনে করেন।
লক্ষ্মীপুর-আলেকজান্ডার রোডের মিশু পরিবহনের বাস চালক হুমায়ুন কবির জানান, সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পুনরায় বাস সার্ভিস চালু করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে বেশকিছু স্থানে সড়ক সংস্কার ও বাস স্ট্যান্ডের জায়গা সুনিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান সমস্যা রাস্তাকে দায়ী করছেন লক্ষ্মীপুর বাস মালিক সমিতি। রামগতি-আলেকজান্ডার প্রায় ২০কি.মি. সড়কের বেহাল দশা এবং রাস্তা সরু হওয়ার ফলে বাস চলাচলে অসুবিধা হয়।
লক্ষ্মীপুর-রামগতি বাজার বাস সার্ভিস চালু ও রামগতি-সোনাপুর বাস সার্ভিস সময়মত ও পর্যাপ্ত সেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে অনিরাপদ যান থেকে পরিত্রান চায় সচেতন মহল। দ্রুত বিআরটিসি বাস সার্ভিস কিংবা প্রাইভেট বাস সার্ভিস চালুর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে রামগতিবাসী।
0Share