লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের একটি পোলট্রি খামারের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ এমন অভিযোগ উঠেছে। তীব্র দুর্গন্ধে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলেও জানান এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, কয়েক মাস আগে চরলক্ষ্মী এলাকায় আবু কালাম একটি পোলট্রি খামার জায়গা পরিবর্তন করে স্থাপন করে লোকালয়ে। দুর্গন্ধে আশপাশের মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। ওই খামারের আশপাশের রাস্তায় চলতে হয় দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে। মুরগির বিষ্ঠার ও মুরগীর দুর্গন্ধের মধ্য দিয়ে থাকতে হচ্ছে ২৫-৩০টি পরিবারকে। দুর্গন্ধের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাই, জনবসতি এলাকায় এ খামারটি বন্ধ করা অতিব জরুরি হয়ে পড়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন বলেন, পোলট্রি মুরগী ও বিষ্ঠার দুর্গন্ধে থাকা যায় না। রোদ উঠলে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। গন্ধে বমি আসে, তৃপ্তি নিয়ে বাড়িতে খাওয়া-দাওয়াও করা যায় না। গন্ধে ঘুমাতেও কষ্ট হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক রাইসুল হাসান বলেন, পোলট্রি বর্জ্যের কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুসের রোগের কারণ হতে পারে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এসব খামার সংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।
দিনমজুর জসিম উদ্দিন জানান, গরিব মানুষের কথা কে শুনব। খামারের গন্ধের আমরা বাড়িতে থাকতে খুবই কষ্ট হয়। খামারটির ভেতরে বিষ্ঠা ফেলার একটি ভাগাড়। পোলট্রি খামারটি ঘেঁষেই জনবসতি। আগে পুকুরের অন্য পাড়ে ছিল খামারটি, এখন বাড়ির সামনে পুকুরের পাড়ে হওয়ায় দুর্গন্ধে থাকা যায় না।
স্থানীয় মো. নুরনবী জানান, দুর্গন্ধে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকার মানুষদের, আর লাভবান হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া এই অঞ্চলে ছোট-বড় অনেকগুলো খামার গড়ে উঠেছে স্থানীয়দের উদ্যোগে। বড় খামারগুলোর মুরগির বিষ্ঠা মাছের খাবার হিসেবে বিক্রি হয়। আবার অনেক সময় খামারে ভেতরেই রয়ে যায় এসব বিষ্ঠা।
খামারের মালিক আবু কালাম দুর্গন্ধ ছড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, গন্ধ যাতে খামারের বাইরে না যায়, সে ব্যবস্থা নেওয়া আছে। আলো বাতাসের মধ্যে খামার রাখতে হয়, বাতাসে গন্ধ গেলে আমি কি করবো।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কামনাশিস মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। কোনো খামার পরিবেশ দূষণ ও বায়ু দূষণ করে এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share