লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে স্থানান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়ে একটি পত্র প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরের ৩ নভেম্বর ওই চিঠি লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগেও প্রেরণ করা হয়। যার নং-৩৫.০০.০০০০.০৫০.১৪.০২৩.১৯-২৩৯। সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর ওই পত্রটি প্রেরণ করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়।
ওই পত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।পত্রালোকে জানা যায়, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের টিসি শাখা অক্টোবর মাসের ১৫ তারিখে ওই সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগে হস্তান্তরের জন্য একটি পত্র ( নং- ১৮.০০.০০০০.০১৫.২৭.০১৩.১৩(অংশ)-১০৯) প্রদান করে।
দেশের পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যে দ্রত যোগাযোগের অন্যতম প্রদান সংযোগ সড়ক হিসেবে তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়ককে গুরুত্ব দিচ্ছে নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাই নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় সড়কটির উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চিঠিতে এ সড়কের দূরত্ব ১১ কিলোমিটার উল্লেখ করা হয়। তবে কমলনগর উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল আনোয়ার লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরকে জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের সাথে সংযুক্ত তোরাবগঞ্জ-মতিরহাট সড়কের দূরত্ব ৮.৬৬ কিলোমিটার এবং প্রস্থ সাড়ে ১২ ফুট।
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, ভোলা, বরিশালসহ দেশের পশ্চিমাঞ্চলের শতশত যাত্রী প্রতিদিন মেঘনা নদী পার হয়ে এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। সড়কটিতে প্রতিদিন কয়েক শত সিএনজি-অটো রিকসা চলাচল করে।
স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১২ জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের নয়টিসহ ২১ জেলার মানুষের আন্তঃজেলা যাতায়াতের অন্যতম রুট ভোলা-লক্ষ্মীপুর (মজুচৌধুরীরহাট) ফেরিঘাট। মোংলা সমুদ্র বন্দর ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রুটও এটি।
কিন্ত এ রুটে ২০০৮ সাল থেকে গত ১৩ বছর ধরে তীব্র নাব্যতা সংকটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ নিয়ে চলছেন হাজার হাজার যাত্রী। সমস্যা সমাধানে এবং রুট সচল রাখতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাটে নতুন একটি ফেরিঘাটের দাবি করেছেন তারা। যাত্রীদের দাবি, মতিরহাটে নতুন একটি ঘাট স্থাপন করলে শুধু সময়ই নয়, নদী পথে ১০ কিলোমিটার বাড়তি পথও কমে যাবে।
নৌযান চালক ও নৌকর্মকর্তারা জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌরুটে প্রতিদিন ফেরির মাধ্যমে ২শতাধিক যানবাহন এবং লঞ্চ, সীট্রাকের মাধ্যমে ৫ থেকে ১০ হাজার যাত্রী আসা-যাওয়া করেন।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, মতিরহাট ও মজুচৌধুরীরহাট উভয় স্থান থেকে লক্ষ্মীপুর জেলা শহর হয়ে অন্য গন্তব্যে আসা-যাওয়া করা যায়। লক্ষ্মীপুর জেলা শহর থেকে সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাটের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার এবং মজুচৌধুরীরহাট থেকে ভোলার ইলিশাঘাটের দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। মোট দূরত্ব দাঁড়ায় ৪৪ কিমি। এর বাহিরে প্রতিটি ফেরী/নৌযান জোয়ারের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।
অন্যদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলা শহর থেকে কমলনগর উপজেলাধীন মতিরহাটের দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার এবং মতিরহাট থেকে ভোলার ইলিশাঘাটের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার। মোট দূরত্ব দাঁড়ায় ৪২ কিমি। জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের ভোলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ভোলা থেকে নদী পথে লক্ষ্মীপুরের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার (বরাবর পূর্ব-পশ্চিমে)। কিন্ত বর্তমানে নৌপরিবহনের জন্য অর্ধবৃত্তাকার এ রুটের মোট দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। যার মধ্যে মেঘনা নদীর ইলিশা থেকে মতিরহাটের দূরত্ব ১৮ কিলোমিটার ফেরি পারাপারে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা।
0Share