সারোয়ার মিরন:রামগতি কমলনগর আলাদা আলাদা দুটি উপজেলা। দেশের দক্ষিনাঞ্চলের জেলা লক্ষ্মীপুরের দুটি উপজেলা। সকল কার্যক্রম আলাদা হলেও নির্বাচনী আসন হিসেবে একটি। ভৌগলিক স্থানগত কারনে দেশের দক্ষিনাঞ্চলে অবস্থান করায় আমাদের এ দুটি উপজেলার গুরুত্বহীন হযে় পডে়ছে প্রশাসনিক কার্যক্রমে। অচ্ছুত ভাবে আমাদের।
রামগতি পৌরসভা। হাজারো সমস্যার এক নাম। নামেই কেবল পৌরসভা। নাগরিক কোন সুযোগ সবিধার বালাই নেই এখানে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এ পৌরসভার ৬০ শতাংশ নাগরিক এখনো বিদ্যুত সুবিধার বাহিরে। পুরো উপজেলার কথা না হয় বাদই দিলাম। ড্রেনেজ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট আবাসন, সান্ধ্য কালীন বৈদ্যুতিক বাতি কোনটিই নেই। কেবল নামে আর খাতা কলমে পৌরসভা। রামগতি পৌরসভা ভাঙ্গনের কবলে পড়লেও কোন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি কাউকে। এরই মধ্যে পৌরসভার কিছুটা মেঘনার পেটে চলে গিযে়ছে দক্ষিন দিক দিযে়।
এ উপজেলার প্রতিটি গ্রামে নেই প্রাথমিক বিদ্যালয়। নেই অনার্স পড়ার মতো কোন কলেজ। নেই কোন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। আলেকজান্ডার টু সোনাপুর আঞ্চলিক মহা সড়কটি ভাঙ্গনের মুখে পতিত হলেও কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। বিশ শয্যা হাসপাতালটির কথা না হয় বললাম না। নেই প্রযে়াজনীয় ডাক্তার কিংবা ঔষধ। ভাঙ্গনের মুখে আছে কযে়ক বছর আগে চালু হওয়া হাসপাতালটি।
উপজেলা গুলোর প্রতিটি হাটে বাজারের ছোট খাটো চা দোকার গুলো এক একটি মিনি সিনেমা হল। দিন রাত চলচ্ছিত্র প্রদর্শনে ব্যস্ত দোকানিরা। আছে পর্ন্য ও নীল ছবির দংশনও। আর এসবের একনিষ্ট খদ্দের হলো স্কুল/কলেজ কামাই করা বিভিন্ন শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা। দুই উপজেলা মিলে সিনেমা হল আছে প্রায় ছয়টির মতো।
যৌতুক ও বাল্য বিযে় এ উপজেলা গুলোর অন্যতম সমস্যা গুলোর একটি। যত্রতত্র লেনদেন হচ্ছে যৌতুকের। হরদমে চলছে বাল্য বিযে়। জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি করে বয়স বাডি়যে় ঘটানো হচ্ছে বাল্য বিযে়। সর্বত্রই কেবল দুর্নীতি আর অনিয়ম।
ভাঙ্গন কবলিত বিদ্যুত গুলো কই যাচ্ছে জানেনা কেহই। রক্ষনাবেক্ষন করা হচ্ছে না ভাঙ্গন কবলিত বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোকে। চারিদিকে কেবল স্বেচ্ছাচারিতার উত্সব। পূর্বেকার জৌলুস হারিযে়ছে আলেকজান্ডার বাজার আদালত চত্তর। রামদয়াল বাজার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সেবাগ্রাম (সিন্নির হাট) গাবতলী বাজার নদী গর্বে বিলীন হযে়ছে বেশ কযে়ক বছর আগেই। হুমকির মুখে আছে আলেকজান্ডার বাজার, রামগতি বাজার, বিবির হাট তথা রামগতি বাজার। অন্যদিকে কমলনগরের পশ্চিম পাশের বিরাট একটা অংশ ইতিমধ্যে বিলীন হযে় গেছে মেঘনা গর্ভে। বেশ কযে়কটি বাজার হুমকির মুখে। ভাঙ্গনের মুখে আছে নব নির্মিত উপজেলা পরিষদ ভবনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান ও এলাকা।
চারিদিকে কেবল হাহাকার আর হাহাকার। কোথাও কেউ নেই দেখবার। কোন কালেই কেউ কি হবে না দেখার? নাকি এ দুটি উপজেলার সমস্যা গুলো জিইযে় রেখে রাজনীতির নোংরা খেলায় মাতবে কথিত নেতারা? প্রসাশনওবা এতো নিরব কেন? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া কি নাগরিক হিসেবে আমাদের অন্যায় হবে?
0Share