সানা উল্লাহ সানু: প্রায় ১শ কোটি ইট তৈরিতে বছরে ১১ কোটি ঘনফুট(সিএফটি) মাটি ব্যবহার হয়। যার পুরোটাই ফসলি মাঠের মাটি। আনা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের র্নিমিত গ্রামীণ সড়ক দিয়ে। ফলে অস্বাভাবিক ভাবে কমছে কৃষিজমি, মাটি পরিবহনে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ সড়ক এবং তৈরি হয়েছে পরিবেশগত ব্যাপক বিশৃঙ্খলা। গ্রামীণ সড়কগুলো এক বছরও টিকছে না। ইটভাটার কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিভিত্তিক ও নদীভাঙ্গন কবলিত ছোট জেলা লক্ষ্মীপুরের চিত্র এখন এমনই।
এ জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের নোয়াখালীর আঞ্চলিক অফিসসহ (বর্তমানে লক্ষ্মীপুর অফিস) কিছু প্রতিষ্ঠানকে পুরোপুরি দায়ী করছে স্থানীয়রা। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং জেলার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক, শ্রমিকদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় ভাবে তথ্য নিয়ে জানা যায়, পাঁচ উপজেলার লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রতি বছর ইটের চাহিদা কত, এর জন্য কত ভাটার প্রয়োজন, এমন কোন পরিসংখ্যান কারও কাছেই নেই। আবার জেলা ব্যাপি কতটি ইটভাটা রয়েছে এমন তথ্যও সংশ্লিষ্ট কোন অফিস থেকে পাওয়া যায় না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অফিস কিংবা জেলা প্রশাসকের অফিস কোন জায়গায় থেকেই সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না। এসব ঝামেলা অতিক্রম করে ২০২২ সালে শুষ্ক মৌসুমে কার্যক্রম পরিচালনা শেষ করেছিল লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যাপী এমন ইটভাটার সংখ্যা ছিল ১৩০টি। চলতি ২০২৩ সালের হিসেবটি পাওয়া যায়নি।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের একটি ইটভাটার মালিক নাম না প্রকাশের অনুরোধ করে জানান, লক্ষ্মীপুর থেকে ইট যাচ্ছে পাশের জেলা চাঁদপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং চট্টগ্রামে। সে কারণে ব্যাপক চাহিদার কারণে কৃষি ভিত্তিক জেলা হওয়া সত্ত্বেও লক্ষ্মীপুরের বছর বছর তৈরি হচ্ছে ইটাভাটা।
সদর উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের বাসিন্দা সিরাজ উদ্দিন জানায়, ইটভাটার পাশে জমি থাকলে ভেঙে যায়, ফসল হয় না। ফলে ভাটার মালিকদের কাছে বাধ্য হয়ে জমির মাটি বিক্রি করে কৃষক। মালিকেরাও জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেন। ইটভাটার মালিকেরা প্রশাসনকে হাতে নিয়ে আরও ইটের ভাটা বৃদ্ধি করছেন। আর ভাটার মাটি পরিবহনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ্রামের সকল সড়ক।
ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৯ এর তথ্য থেকে জানা যায়, একটি ইটভাটা স্থাপনের পূর্বে প্রায় ১০টি সরকারি অফিস জড়িত থাকে। অন্যদিকে প্রতিটি জেলায় একজন অতিরিক্ত জেলা প্রসাশকসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাগণ, বন কর্মকর্তা এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মনোনীত কোন কর্মকর্তাসহ একটি তদারকি কমিটি রয়েছে।
ইটভাটা স্থাপনের অনেকগুলো বিধি নিষেদেও মধ্যে বিশেষ কোন স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং লোকালয় থেকে কমপক্ষে ১ কিলোমিটার দূরে ভাটা স্থাপন করতে হবে। তাছাড়া আবাদি জমিতে কোনো ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। কৃষি জমির মাটি ব্যবহার করা যাবে না। এলজিইডির রাস্তা ব্যবহার করা যাবে না । কাঠ পোড়ানো যাবে না। কিন্ত এর কিছুই মানছে না ভাটার মালিকরা। ওই আইনের উদ্দেশ্য ছিল ২০২০ সালের মধ্যে পোড়া ইট শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। কিন্ত লক্ষ্মীপুরে প্রতি বছরই ইটপোড়ানোর জন্য ভাটা বাড়ছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর এবং জেলা কৃষি বিভাগের সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে জেলায় ইটভাটা ছিল ৭৫টি। ২০২২-২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ি জেলায় বৈধ ইটভাটা ৭৫ টি, অবৈধ ৪৭ টি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আরেক সহ-সভাপতি আশরাফ আলী চৌধুরী জানান, রামগতি উপজেলার চররমিজ নামের একটি ইউনিয়নে রয়েছে ২৮টি ইটভাটা। এরমধ্যে ৫ নং ওয়ার্ডেই রয়েছে ১৪টি ভাটা। রামগঞ্জে বর্তমানে রয়েছে ২৮টি ইটভাটা। এরমধ্যে ভোলাকোট ইউনিয়নেই রয়েছে ১১টি। ইটভাটার মাটি নেয়ার পর পুরো ভোলাকোট ইউনিয়নটি এখন পরিত্যক্ত বিলে পরিণত হয়েছে। সদর উপজেলার তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আন্দারমানিক গ্রামেই রয়েছে এক সাথে ১১টি ইটভাটা।
ইটভাটা স্থাপন আইনে ইটভাটা স্থাপনের জন্য অনুমোদিত জমি ৩ একর হলেও ভাটার মালিকরা দখল করছে কমপক্ষে ৯-১০ একর। সে হিসেবে ইটভাটার নিচে লক্ষ্মীপুর জেলার ১ হাজার একর জমিও চলে গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদর উপজেলার তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আন্দারমানিক গ্রামেই রয়েছে এক সাথে ১১টি। এ ইউনিয়নে মোট ভাটা রয়েছে ২১টি। পুরো ইউনিয়নটি কৃষিভিত্তিক এলাকা। এছাড়া জেলার ভবানীগঞ্জ, মান্দারী, ভোলাকোট, দরবেশপুর এবং চর রমিজ এ ইউনিয়নগুলোতে ইটভাটা ছাড়া আর কিছু চোখে পড়ে না। গ্রামবাসিদের মধ্যে কয়েকজন জানিয়েছে উক্ত কোন ইউনিয়নেই অনাবাদি কোন জমি ছিল না।
ইট তৈরিতে মাটি ও একটি ভাটায় বছরে কি পরিমাণ ইট তৈরি হয় এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কথা হয় সদর উপজেলার একটি ভাটার ম্যানেজার সোলাইমানের সাথে। তিনি জানান, ইটের সাইজ অনুসারে একটি কাচাঁ ইট তৈরিতে মাটি লাগে ০.০৮৫ ঘনফুট। বছরের অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি ভাটায় কমপক্ষে গড়ে ৮ রাউন্ড ইট পোড়ানো হয়। প্রতি রাউন্ডে ১০ লাখ ইট থাকে। তার হিসেবে মতে এক একটি ভাটায় বছরে কমপক্ষে ৭০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। তার হিসেবে লক্ষ্মীপুর জেলায় ২০২২ সালের শুরুতে ১৩০টি ইটভাটার জন্য বছরে ১১ কোটি ঘনফুট মাটি প্রয়োজন। যেখান থেকে প্রায় ১শ কোটি ইট তৈরি হয়। ইট তৈরির কারিগর জামাল এবং আরো কয়েকজন ম্যানেজার একই তথ্য দিয়েছেন।
তারা আরো জানান, ইট পোড়ানোর সংখ্যা রেজিষ্ট্রার বইতে লিখার কথা থাকলেও ভাটার মালিকরা প্রকৃত সংখ্যা লিখে না। প্রকৃত সংখ্যা না লিখার কারণ জানতে চাইলে তারা জানান, ভ্যাট ফাঁিক দেয়ার জন্যই প্রকৃত সংখ্যা লিখা হয় না।
সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চর মনসা গ্রামের সবজি চাষী আবদুল বাতেন জানান, তার ক্ষেতের পাশে ইটের ভাটা। রাতদিন সেখানে পুড়ছে ইট, উড়ছে ধোঁয়া আর গ্রামের প্রতিটি কাঁচাপাকা সড়কে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মাটিবাহী ট্রাক্টর গাড়ির ভয়ংকর শব্দ। ইটভাটার ধূলোবালি এবং গাড়ির অত্যাচারে এ গ্রামবাসি পুরোপুরি অসহায়।প্রতিদিন প্রতিটি ভাটায় কমপক্ষে ৩০-৪০ ট্রাক্টর মাটি ঢুকে। ইটভাটা ও আশপাশের গ্রাম জুড়ে যেন মাটি কাটার উৎসব চলছে।
তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা সিরাজ উদ্দিন জানান, ইটভাটার কাগজের শুধু সীল আর স্বাক্ষরগুলোই বৈধ, বাকি সবই অবৈধ। এটা কিভাবে তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি জানান, কিছু ইটেরভাটা পরিবেশ ছাড়পত্র, কৃষি বিভাগের ছাড়পত্র, ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র, বিএসটিআই ইত্যাদি যাবতীয় অনুমোদন নিয়ে কাগুজে বৈধ। কিন্ত এসব কাগজ নেই বা কম আছে তারা আইনে অবৈধ। সিরাজ উদ্দিন জানান অথচ বৈধ ও অবৈধ সবারই ইট তৈরি প্রক্রিয়া, ভাটা স্থাপন এলাকা, জ¦ালানী ব্যবহার, মাটি সংগ্রহ প্রক্রিয়া সবই অবৈধ।
একই এলাকার আরিফুর রহমান অভিযোগ করে জানান, কোন রকম পরিদর্শন না করেই ছাড়পত্র দিচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর, ৩ ফসলি জমিকে অনাবাধি দেখিয়ে ছাড়পত্র দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। এরকম বৈধতা তো পুরোটাই অবৈধ। তিনি বলেন, এভাবে পরিবেশ সদনপত্র নিয়ে কৃষি জমি, গ্রামের রাস্তাঘাট এবং পরিবেশ ধ্বংস মানুষকে জিম্মি করা হচ্ছে।
সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের জেবি ইটভাটার এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে জানান, ইটে ব্যাপক লাভ। সে কারণে কিছু লোক ইট ভাটা স্থাপনে মরিয়া। সে কারণে বছর বছর বাড়ছে ইটভাটা। তার মতে মাটি ব্যবসায়ী এবং ভাটার মালিকরা বেশির ভাগই কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কেউ কেউ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও আছে। গ্রামের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরাও মাটি ক্রয় বিক্রয়ের সাথে জড়িত। অনেক ব্যবসায়ী জোর করে কৃষকের জমিতে ভাটা দিচ্ছে এবং মাটি নিচ্ছে। অনেকে সাধারণ মানুষের সাথে সন্ত্রাসী আচরণও করছে।
কমলনগরের তোরাবগঞ্জ গ্রামের কাদের জানান, গত ২ বছর আগে তার বাড়ির পাশের একটি ভাটার ধোঁয়ায় তার বাড়ির বহু গাছ মরে গেছে। মালিকরে নামে মামলাও করেছিলেন। কিন্ত অফিস আদালতের সব মানুষ ভাটার মালিকের পক্ষে। ভাটার মালিকরা কাঁচা টাকা দিয়ে সব রাতারাতি ম্যানেজ করে ফেলেছিল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুর রহমান বলেন, মাটিবাহী ট্রাক্টর ও পিকআপ ভ্যানের অবাধ চলাচলের কারণে বৃদ্ধ ও শিশুরা প্রায়ই দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে। সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে।
সম্প্রতি লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে ফসলি জমির মাটি লুট এবং ইটভাটা মালিক ও মাটির দালালদের দৌরাত্ম্যের বিষয়টি তুলে ধরেন আহমেদ জাকারিয়া নামে এক ভুক্তভোগী। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে, কৃষি কার্ডধারী কৃষকবৃন্দদের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে, শোভাযাত্রা করেছে কিন্তু কোনো কিছুতে কোনো কাজ হয়নি।
পরিবশেবাদী সংগঠন সবুজ বাংলাদেশের মাহবুবুর রশিদ জানান, ইটভাটায় কেবল মাটি ও পরিবেশ ক্ষক্ষতিগ্রস্থ হয় না। এখানে বাধ্যতামূলক শ্রম আছে, দাদনভিত্তিক শ্রম ও শিশুশ্রম আছে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই পোড়ানো ইট ব্যবহার করে না। সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে দ্রুত পোড়া ইটের বিকল্প ব্যবহারে ফিরে যেতে হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাহ আলম পাটোয়ারী অভিযোগ করে জানান,
গ্রামীণ সড়কগুলো ইট ভাটার কারণে টেকানো যাচ্ছে না। অথচ স্থানীয় সরকার বিভাগের কোন সড়কের পাশে ইটভাটা স্থাপনের কোন নিয়ম নেই। তিনি আরো জানান, আমরা কিভাবে এটা বন্ধ করবো? ইটভাটা অনুমোদনের জন্য যে কমিটি আছে তাতে তো স্থানীয় সরকার বিভাগের কেউ নেই।
লক্ষ্মীপুর জেলায় এতদিন পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অফিস ছিল না। বর্তমানে লক্ষ্মীপুওে অফিস হয়েছে। এর মাঝে লক্ষ্মীপুর জেলার পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখাশোনা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তরের নোয়াখালী জেলা অফিস। সরেজমিন পরিদর্শন না করে কিংবা নীতিমালা না দেখে পরিবেশ ছাড়পত্র দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কোন সাধারণ তথ্য জানাতে চায়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক তানজিদ তারেক জানান, সব কিছু জানে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। আমরা জেলা প্রশাসককে তথ্য দিই অন্য কাউকে তথ্য দিতে বাধ্য নয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
রামগঞ্জ উপজেলা কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা বলেছেন,
রামগঞ্জে ২০টি ইটভাটা রয়েছে। কেউই আইন মেনে চলেনা। বিষয়টি এমন হয়েছে যে, নিয়মন অনুযায়ী সবই বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও বিবেচনায় ছাড় দিয়ে অভিযান চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে ৭ টি ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে। যেসব ইটভাটায় কাগজপত্র নাই, তারা নিজেরাই বন্ধ করেছে। আবার যাদের কিছু ত্রুটি আছে তাদের প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে তারা সঠিকভাবে আইন মেনে ইটভাটা পরিচালনা করবেন। অনথ্যায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে আমাদের অভিযান নিয়মতি রয়েছে তা অব্যাহত থাকবে।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস বলেন,
কমলনগরে ১৮টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে গত দ্ইু মাসে প্রায় দুই লক্ষ টাকা জরিমান করা হয়েছে। কাজটি যেহেতু পরিবেশ অধিদপ্তরের। যদি তারা কোন অভিযান করে আমরা তাদের সহযোগিতা করি। তবে কোন ইটভাটা অনিয়ম করলে কিংবা তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে আমরা তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান বলেন,
সম্প্রতি এজেলায় আমরা দায়িত্ব পেয়েছি। দায়িত্ব পাওয়ার পরপরই অনেক গুলো ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানার পাশাপাশি ভাটা বন্ধ করে দিয়েছি। লক্ষ্মীপুরের ইটভাটার মালিকদের বেশ সমস্যা রয়েছে। বিশেষ করে অভিযান চালিয়ে বাংলা চিমনিসহ অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে দেয়ার পর রাতারাতি আবার সেটি তুলা হয়। তাদের কোন ভাবেই দমানো যাচ্ছেনা। তবে যতবার তারা উঠাবে ততবার জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে সে গুলো বিনষ্ট করবো।
অবৈধ ইট ভাটার তালিকা তৈরি করে প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনের সিদ্ধান্ত এলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা নিজেরা ও জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু ফসলী জমির মাটি বিক্রির বিষয়ে কৃষি বিভাগ থেকে কখনোই আমাদেরকে কিছুই জানায় নি। এছাড়াও জেলার আইনশৃঙ্খলা মিটিংএ কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় বিক্রির বিষয়ে কৃষি বিভাগকে পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলতে শুনিনি।
জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন,
অবৈধ ভাটা গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ থেকে ২০টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অবৈধ ভাটা বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অভ্যাহত রয়েছে। এছাড়া ফসলী জমির মাটি যেন ইট ভাটায় যেতে না পারে সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নজরদারি থাকবে।
এ প্রতিবেদনটি প্রথমে প্রকাশিত হয় দ্য বিজনেস স্ট্যার্ন্ডাড পাত্রকায়। এখানে ক্লিক করে মূল প্রতিবেদনটি পড়া যাবে।
0Share