জুনায়েদ আহম্মেদ: নাব্যতা সংকট, ডুবো চর ও পাতানো জালের কারণে ব্যাহত হচ্ছে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটের ফেরি চলাচল। নদীর জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করেই এখন এই নৌ-রুটে চলাচল করছে ফেরি। তবুও পারাপারের সময় মেঘনা নদীর ডুবোচরে আটকা পড়তে হয়।
এতে নষ্ট হচ্ছে কর্ম ঘন্টা। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই নৌ-রুটে চলাচলকারীরা। এদিকে ফেরি কৃষাণি ও ফেরি কলমিলতা বিকল হওয়ার কারণে ফেরি চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় গত পাঁচদিন ধরে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরী হাট ফেরি ঘাটে আটকা পড়েছে যাত্রীবাহী বাস, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক যানবাহন। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন এ পথে যাতায়াতকারী যাত্রী ও যানবাহনের শ্রমিকরা।
লক্ষ্মীপুর হয়ে ঢাকা-চট্রগ্রামের সাথে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী হাট ফেরি ঘাট সার্ভিস ২০০৮ সালে চালু করে সরকার। এরপর থেকেই লক্ষ্মীপুর-ভোলা এই নৌ-রুট দিয়ে যাতায়াত করছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। বর্তমানে এই নৌ-রুটে কনকচাঁপা, কলমিলতা, কুসুমকলি ও কিষানী নামের চারটি ফেরি চলাচল করছে।
কিন্তু গত পাঁচদিন ধরে কৃষাণি ও কলমিলতা নামের দুইটি ফেরি বিকল হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এরুট ব্যবহারকারীরা। এছাড়াও মজুচৌধুীর হাট ঘাটের প্রায় এক কিলোমিটার অদুরে মেঘনা নদীর সংযোগস্থল রহমতখালী চ্যানেল, বুড়ির খাল ও মেঘনার নদীর মতিহাট পয়েন্টে নাব্যতা সংকট, ডুবোচর ও পাতানো জালের কারণে প্রতিনিয়তই এ নৌ-রুটে ফেরি চলাচলে বিঘœ ঘটছে।
এতে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌ-রুটে ফেরি চলাচল করছে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে। এতে করে সময় নষ্ট হওয়ায় পাশাপশি প্রতিদিন ফেরি ডুবোচরে আটকা পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় এই নৌ-রুটে চলাকারী যাত্রীদের।
ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কয়েকজন ট্রাকের চালক জানান, গত পাঁচ দিন ধরে দুইটি ফেরি বিকল থাকায় সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তাছাড়া ডুবোচরের কারণে ফেরি পারাপারে এখন সময় লাগে আট থেকে দশ ঘন্টা। এতে করে ফেরি না পেয়ে পারাপারের জন্য দিনের পর দিন তাদের আটকা পড়ে থাকতে হয় মজু চৌধুরী হাট ঘাটে।
এতে নষ্ট হচ্ছে ট্রাকে থাকা কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রী। ঘাটে আটকা পড়ে থাকায় টাকার অভাবে না খেয়েও থাকতে হয় বলে জানান যানবাহন শ্রমিকরা।
ফেরি কৃষাণি ইন্টার মাষ্টার মশাহেদুল ইসলাম ও কলমিলতার ইঞ্জিন অফিসার শামছুদ্দিন জানালেন, মেঘনা নদীর লক্ষ্মীপুর অংশের তিনটি পয়েন্টে ডুবোচর ও নদীর নব্যাতা সংকটের কারণে চলাচলে সমস্য পড়তে হয় তাদের। এতে করে সময়মত ফেরী চালোনাসহ ডুবোচরের কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা নদীতে আটকা পড়ে থাকতে হয় তাদের।
এদিকে বিআইডব্লিউটিসি লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাট ফেরি ঘাটের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানালেন, নদীর নাব্যাতা সংকট, পাতানো জাল ও ডুবোচরের কারণে ফেরী চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। তবে কৃষাণি ও কলমিলতা নামের দুইটি ফেরি বিকল হওয়ার কারণে পারাপারে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
দ্রুত এগুলো মেরামতের কাজ সম্পন্ন হবে হবে বলে জানান তিনি।ফেরি সংকট সমাধানসহ এ নৌ রুটে নির্বিঘ্নে ফেরি চলাচল করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রদক্ষেপ নিবেন, এমনটাই প্রত্যাশা এ নৌ-রুট ব্যবহারকারীদের।
0Share