নিজস্ব প্রতিনিধি: উপকূলবাসীর জীবনমান উন্নয়নসহ উপকূল সুরক্ষার লক্ষ্য সামনে রেখে এবার দেশেপ্রথমবারের মত ‘উপকূল দিবস’ পালিত হচ্ছে। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরেরপ্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের দিনটিকে ‘উপকূল দিবস’ হিসাবে প্রস্তাব করা হয়েছে।এদিন একযোগে উপকূলের ৩৪ স্থানে ‘উপকূল দিবস’ পালিত হবে। কর্মসূচির মধ্যেরয়েছে র্যালী, আলোচনা সভা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি সম্মলিতস্মারকলিপি পেশ। উপকূলবর্তী ১৫ জেলার ৩২ উপজেলার ৩৪ স্থানের দিবসটি পালিতহবে। উপকূলীয় জেলা লক্ষ্মীপুরের সদর, রায়পুর প্রেসক্লাব; ভোলা জেলার সদর, চরফ্যাসন,তজুমদ্দিন, মনপুরা; পটুয়াখালীর সদর, গলাচিপা, বাউফল, কলাপাড়া, কুয়াকাটা,রাঙ্গাবালী, নীলগঞ্জ (কলাপাড়া); চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ; ফেনীর সোনাগাজী,ছাগলনাইয়া; সাতক্ষীরার সদর, তালা, শ্যামনগর, বুড়িগোয়ালিনী (শ্যামনগর);খুলনার পাইকগাছা; বরিশাল সদর; চাঁদপুর সদর; পিরোজপুরের কাউখালী;নোয়াখালীর সুবর্ণচর, হাতিয়া; বরগুনার সদর, পরীরখাল (বরগুনা সদর);বাগেরহাটের সদর, শরণখোলা; কক্সবাজারের টেকনাফ, সেন্টমার্টিন; এবংঝালকাঠির সদর ও কাঁঠালিয়ায় দিবসটি পালিত হচ্ছে।
উপকূল দিবস বাস্তবায়নকমিটির আহবানে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের প্রায় ১০০ সংগঠণ ও প্রতিষ্ঠানদিবস পালনে এগিয়ে এসেছে। এরমধ্যে রয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা,গণমাধ্যকর্মীদের সংগঠণ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণ, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান,কিশোর-তরুণদের ফোরাম ইত্যাদি। দিবস পালনের প্রধান উদ্যোক্তা হিসাবে রয়েছেবেসরকারি প্রতিষ্ঠান উপকূল বাংলাদেশ, কোস্টাল জার্নালিস্ট ফোরাম অববাংলাদেশ, আলোকযাত্রা দল। এত দিবসের ভিড়ে উপকূলের জন্য একটি পৃথক দিবসপ্রসঙ্গে উদ্যোগের সঙ্গে উপকূল দিবস বাস্তবায়ন কমিটির কেন্দ্রীয়সমন্বয়কারী ও উপকূল সন্ধানী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম মন্টু বলেন,
উপকূলেরপ্রায় ৫ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত বহুমূখী দুর্যোগের সঙ্গে বসবাস করেন। কেবলদুর্যোগ এলেই এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর খবরাখবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তুস্বাভাবিক সময়েও তাদের জীবন যে কতটা অস্বাভাবিক, সে বিষয়ে খুব একটা খোঁজরাখা হয়না। উপকূলের দিকে গণমাধ্যম ও নীতিনির্ধারকদের নজর বাড়িয়েউপকূলবাসীর জীবনমান উন্নয়ন ঘটানোই উপকূলের জন্য একটি দিবস প্রস্তাবের মূললক্ষ্য।
১২ নভেম্বর ‘উপকূল দিবস’ প্রস্তাবের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে তিনিবলেন, দিবস বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ১২ নভেম্বরকে বেছে নেওয়ার কারণ হচ্ছে, ১৯৭০সালের এই দিনটি উপকূলবাসীর জন্য স্মরণীয় দিন। এদিন বাংলাদেশের উপকূলেরউপর দিয়ে বয়ে যায় সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ভোলা সাইকোন’।
এই ঘূর্ণিঝড়লন্ডভন্ড করে দেয় উপকূল। বহু মানুষ প্রাণ হারান। ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসেন।এই ঘূর্ণিঝড় গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এটি সিম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি৩ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় ছিল। ঘূর্ণিঝড়টি ৮ই নভেম্বর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হয়।ক্রমশ শক্তিশালী হতে হতে এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১১ নভেম্বরএটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৮৫-২২৫ কিলোমিটারে পৌঁছায়। ওই রাতেই উপকূলেআঘাত হানে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলীয় অঞ্চল ও দ্বীপসমূহ প্লাবিত হয়। ওইঘূর্ণিঝড়ে প্রায় পাঁচ লাখ লোকের প্রাণহানি ঘটেছে বলে বলা হলেও বেসরকারিহিসাবে প্রায় দশ লাখ। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)বিশ্বের পাঁচ ধরনের ভয়াবহ প্রাণঘাতি আবহাওয়া ঘটনার শীর্ষ তালিকা প্রকাশকরে চলতি বছরের ১৮ মে। ওই তালিকায় বাংলাদেশের উপক‚ল অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়েযাওয়া ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড়টিকে পৃথিবীর সর্বকালের ইতিহাসেসবচেয়ে ভয়ংকর প্রাণঘাতি ঝড় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকেউইকিপিডিয়ার সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত রেকর্ডকৃত ঘূর্ণিঝড় সমূহের মধ্যে এটিসবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্নিঝড়।
এ বিষয়ে আরো জানতে পড়ুন:
নভেম্বরে বাংলাদেশে ৮ ধ্বংসাত্মক ঘূর্ণিঝড়
পৃথিবীর সর্বকালের ইতিহাসে ভয়াবহ প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে: জাতিসংঘ
ভয়ংকর ১২ নভেম্বর: উপকূলের কেয়ামত
১২ নভেম্বর কে উপকূল দিবস ঘোষণা চায় লক্ষ্মীপুর নোয়াখালীবাসি (ভিডিওসহ)
#12November1970
দিবসের দাবির ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক সংবাদ সূত্র :
0Share