লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদে নকল টোকেনে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের (ভিজিএফ) চাল সংগ্রহ করতে এসে প্রতারিত হয়েছেন অর্ধশতাধিক হতদরিদ্র মানুষ। নকল টোকেন ওই পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো: সিরাজ বিতরণ করেছেন বলে জানান তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে চাল সংগ্রহ করতে আসলে এ ঘটনা ঘটে। ইউনিয়ন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদে হতদরিদ্রের জন্য ঈদ ভিজিএফের ১০ কেজি করে চাল বিতরণের জন্য ৪ হাজার ৬ শত ৫০ নামের বিপরীতে সাড়ে ৪৬ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়।
চাল বিতরণ সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিষদের সকল সদস্যদের সাথে আলোচনা করে প্রত্যেক নামের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সিল সম্বলিত টোকেন সিস্টেমের সিদ্ধান্ত হয়।ওই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৪ হাজার ৬ শত ৫০ নামের জন্য ৪ হাজার ৬ শত ৫০ টি টোকেন পরিষদের সকল সদস্যদের দিয়ে বিতরণ করা হয়।টোকেন দেখে চাল বিতরণ শুরু করে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার, চেয়ারম্যান ও পরিষদের সদস্যরা।
চাল বিতরণের এক পর্যায়ে কয়েকজন একাধিক নকল টোকেন সহ ধরা পড়ে চাল বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে।কিছুক্ষণের মধ্যে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক শতাধিক টোকেনসহ ধরা পড়ে। এদের মধ্যে মো: ইব্রাহীম, মো: মাহফুজ,আব্দুল গণি,রাসেল,আসিফ,নুরুল ইসলামসহ সবাই জানান, তারা সবাই তিন নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের ভিজিএফ’র (১০ কেজি) চাল পেতে তাদেরকে টোকেন দিয়েছেন। টোকেনগুলা যে নকল তা তারা জানতেননা। অভিযুক্ত তিন নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানান, পরিষদের চেয়ারম্যান ১৯০ নামের টোকেন আমাকে দিয়েছেন। আমি ওই টোকেন সুফলভোগীদের মাঝে বিতরণ করেছি।
নকল টোকেনের বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। চর লরেঞ্চ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযুদ্ধা এ কে এম নুরুল আমিন বলেন, সিরাজ মেম্বারকে ১৯০ টি টোকেন দেওয়া হয়েছে।সে চালের সংকট করে আমাকে বিপদে ফেলানোর জন্য পরিকল্পিতভাবে অতিরিক্ত টোকেন ছাপিয়ে তার ওয়ার্ডে বিলি করে।
এর আগেও সে এমন কাজ করেছে।এবার ধরা পড়েছে।বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও চরলরেন্স ইউনিয়নের চাল বিতরণের দায়িত্বপ্রাপ্ত (ট্যাগ) অফিসার মো: মহসিন জানান, চাল বিতরণকালে নকল টোকেন জব্দ করে চেয়ারম্যানের নিকট রাখা হয়েছে।
চাল বিতরণ শেষে জব্দকৃত টোকেনের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সূচিত্র রঞ্জন দাশ জানান,বিষয়টি শুনেছি,যাচাই-বাছাই করে প্রকৃতদের মাঝে চাল বিতরণ করতে নির্দেশ দিয়েছি।
81Share