লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এক মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ রয়েছে উম্মে সালমা (৩১) নামে এক গৃহবধূ। সাথে তার ৭ বছর বয়সী ছেলে ফারহান হাসিবও নিখোঁজ রয়েছে। তাদের খুঁজে পেতে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আকুতি জানিয়েছে সৌদি আরব প্রবাসী ফরিদুল আলম ফারুক।
তিনি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভাদুর ইউনিয়নের রাজারামপুর গ্রামের পাটওয়ারী বাড়ির বাসিন্দা। গত ২৪ বছর ধরে সৌদিতে আছেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, আরিফ হোসেন নামে এক যুবকের সাথে পরকীয়া জেরে তার স্ত্রী উধাও হয়ে আছে।
ফারুকের মা ফাতেমা বেগম, বোন রশিদা বেগম ও চাচাতো ভাই আবদুল আজিজ বলেন, বাবুলের স্ত্রী উম্মে সালমা দেশের বাড়িতে এবং মাঝেমধ্যে ঢাকার তুরাগে সন্তানকে নিয়ে ফ্লাট বাসায় ভাড়া থাকতো। মাঝেমধ্যে ফারুক দেশে আসতো। গত এক মাস ধরে তারা মা-ছেলে নিখোঁজ রয়েছে। কোথায় আছে- আমরা বা তার আত্মীয়-স্বজন কেউ জানে না৷
প্রবাসী ফারুক জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে তার স্ত্রী উম্মে সালমা ও ছেলে হাসিব নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরপর তাদের আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না৷ এ বিষয়ের তার ভাই আমির হোসেন গত ২৯ সেপ্টেম্বর রামগঞ্জ থানায় নিখোঁজ জিডি করেন।
ফারুক বলেন, আমি এখন সৌদিতে আছি। ২৭ সেপ্টেম্বর আমি সাতদিনের ছুটিতে দেশে যাই। সৌদি আরব থেকে দেশে এসে আর স্ত্রী-সন্তানকে পাইনি। এদিন ভোর থেকেই সে আমার সন্তানকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে তাদের পাওয়া যায়নি৷ আরিফ হোসেন (৩০) নামে আমাদের এক প্রতিবেশির সাথে আমার স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশি ইউসুফ পাটওয়ারীর পুত্র যুবদল নেতা আরিফ পাটওয়ারীর সাথে মামলা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। সম্প্রতি আমি সৌদি আরব থাকাবস্থায় সে আমার ইমোতে আমার স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি পাঠায়। এর কয়েকদিন পর আমি দেশে আসার পরেও আরও ছবি পাঠিয়েছে। এ নিয়ে আমি তার বিরুদ্ধে ২৭ জুলাই ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করি। মামলায় আমার স্ত্রী সাক্ষী। পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের মামলাটি তদন্ত করতেছে। অন্যদিকে আরিফের বিরুদ্ধে ব্যবিচারের অভিযোগ এনে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে আরেকটি মামলা করি। আদালত মামলাটি রেকর্ড করার জন্য রামগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মামালটি রেকর্ড করা হয়। এছাড়া যেদিন ধরে আমার স্ত্রী-সন্তান নিখোঁজ রয়েছে, ওইদিন আইসিটি আইনে দায়েরকৃত মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত ছিল। ঠিক এদিনই আমার স্ত্রী রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছে। ঘরে থাকা নগদ টাকা ও স্বার্ণালংকাও নেই। আমি আমার স্ত্রী-সন্তানের খোঁজ পেতে ব্যাকুল হয়ে আছি।
এ ঘটনায় আরিফের হাত রয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী-সন্তানকে উদ্ধারের জন্য পুলিশ আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে আরও আন্তরিক হওয়ার দাবি করেন তিনি।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, আদালতের মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। আর নিখোঁজ জিডির আলোকে গৃহবধূ ও তার সন্তানের খোঁজ চালানো হচ্ছে।
161Share