লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানার বিরুদ্ধে সাজানো মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিবাদী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার(১৭ আগষ্ট) মামলার বাদী সাংবাদিকদের নিকট কখনো নিজকে মামলার বাদী আবার কখনো বলেছেন তিনি মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না।
এর আগে গত ৮ আগষ্ট তারিখে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল কমলনগর আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী কমলনগর উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. মহিন উদ্দিন।
তিনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেউ নন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাথে তার কোন ধরনের সম্পৃক্ততাও নেই। কিন্ত তা সত্ত্বেও তিনি মামলার বাদী।
হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত মেডিকেল অফিসার সোহেল রানা গত বছরের ৩০ মে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত আদেশে রাত্রে ডিউটির জন্য হাসপাতালে অবজারভেশন কক্ষে রাত্রি যাপন করে আসছেন। কোয়ার্টারে সংস্কারের কাজ চলায় তখন তখন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের এ আদেশ দেন। এ ছাড়াও তার জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী কোয়ার্টারের ভাড়া পরিশোধ করছেন তিনি। কিন্তু একটি পক্ষ বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জনকে অবহিত করেন। সিভিল সার্জন ডা.আহমেদ কবির পরিদর্শনে এসে ওই কক্ষটি ছেড়ে দিয়ে কোয়ার্টারে চলে যেতে বললে সোহেল রানার তাৎক্ষণিক ওই কক্ষ ছেড়ে দিয়ে কোয়ার্টারে চলে যান।
কমলনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা. সোহেল রানা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তাহের স্যারের অনুমতিক্রমে রোগীদের জরুরি সেবার জন্য হাসপাতালের একটি কক্ষ ব্যবহার করেছি। আমি ওই কক্ষ ব্যবহার করলেও কোয়ার্টারের ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করেছি। তাছাড়া ডিউটিকালীন সময় চিকিৎসকরা রাতদিন ওই কক্ষে বিশ্রাম নেন। আমি এখন ওই রুমে থাকি না। এ বিষয়ে মহিন উদ্দিন নামের যে লোক আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে তাকে তাকে আমি চিনি না এবং কখনো দেখিওনি। কি কারণে হয়েছে তাও বুঝতে পারছি না। তবে হাসপাতালের আভ্যন্তরীণ এবং ডিউটি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এক নার্সের সাথে আমার মণমালিন্য হয়েছে। সমাধানও হয়েছে। হয়তো সে থেকে এরকম আজগুবি মামলার সূত্রপাত। আমি এর সঠিক তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার আশা করছি।
এ বিষয়ে চরফলকন এলাকার মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মহিন উদ্দিননের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি মামলার বাদী বলে স্বীকার করেছে। তবে কোন কোন সাংবাদিকদের নিকট তিনি অস্বীকারও করেছেন। এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে এবং মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সব ঘটনা পুলিশ জানে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, কোয়ার্টারে সংস্কার কাজ চলায় সেখানে থাকা সম্ভব নয়। এজন্য অবজারভেশন রুমে সোহেলকে আমিই থাকতে বলেছি। গত বছরের মে মাস থেকে সোহেল নিয়মিত কোয়ার্টারের ভাড়াও পরিশোধ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আদালতে যে মামলা হয়েছে বিষয়টি ভিত্তিহীন।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার ডা.সোহেল রানার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলার তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়ছেন। এখন পর্যন্ত পুলিশও তদন্তের জন্যে বাদীকে খুঁজছে, তবে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
73Share