মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, কারেন্ট জাল, খুঁটি জাল, চরঘেরা জাল, মশারি জাল ও অন্যান্য ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণে লক্ষ্যে লক্ষ্মীপুরের রামগতির মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য দপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার সেন্টার ঘাটে বিশেষ কম্বিং অপারেশনে জব্দ করা অবৈধ জালগুলোতে আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এরআগে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দিনব্যাপি অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন, বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ফেরদৌস আহম্মদ এবং নৌ-পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানকালে ১৬ টি বেহুন্দি জাল, ৩০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ও ৩০ কেজি জাটকা ইলিশ জব্দ করা হয়। এসময় ৯জন জেলেকে আটক করা হয়। পরে, জব্দকৃত ওই জালগুলোকে মেঘনার পাড়ে এনে আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত মাছগুলোকে স্থানীয়দের মাঝে বিলি করা হয়েছে।
আটককৃত জেলেদেরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৬ জেলেকে প্রত্যেকের ৩ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক ৩ জেলেকে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেন এ রায় দেন।
বড়খেরী নৌ পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) ফেরদৌস আহম্মদ বলেন, সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধঘোষিত এসব জাল ব্যবহারকারীকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ১ বছর থেকে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন বলেন, মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর এসব জালের ব্যবহার বাড়লে জাটকাসহ সামুদ্রিক ও উপকূলীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের ডিম, রেণু ও পোনা নষ্ট হয় এবং উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছের উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ার পাশাপাশি জলজ জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। অবৈধ জাল বন্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশেষ কম্বিং অপারেশন-২০২৪ (২য় ধাপ) উপলক্ষে আজকে আমাদের এ অভিযান। ক্ষতিকর অবৈধ জাল অপসারণের লক্ষ্যে মাসব্যাপি কয়েক ধাপে এ অভিযান চলবে।
উল্লেখ্য, দি প্রটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ রুলস, ১৯৮৫ অনুযায়ী সরকার ২০১৩ সালে মৎস্য সম্পদ ধ্বংসকারী বেহুন্দি জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জাল, বেড়/জগৎবেড় জাল, কারেন্ট জাল প্রভৃতি ক্ষতিকারক জালের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এবং ইলিশ আহরণের জালের ফাঁস ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ৬ ইঞ্চি নির্ধারণ করেছে।
মিসু সাহা নিক্কন/বার্তা-01-24
18Share