রহমত উল্যাহ পাটোয়ারী, রামগঞ্জ: রামগঞ্জের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের পূর্ব বিঘা তালুকদার বাড়ির আলী আজমের পুত্র সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা আখি নিজকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চাকুরিসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে অর্ধশত লোকের নিকট থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে গত জুন মাস থেকে পলাতক রয়েছে। এতে ভুক্তভোগী আবু ইউছুপ বাদী হয়ে সাইফুল ও তার স্ত্রীসহ ৮জনকে আসামী করে ১৪ জুলাই তারিখে লক্ষ্মীপুর আলাদতে একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানান যায়, সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন পলাতক থেকে ২০২১ সালে শেষদিকে তার স্ত্রীসহ বাড়িতে আসে। থাকতেন চাচা দুলাল তালুকদারের ভবনের ২য় তলায়। এসময় তিনি তার স্ত্র কে ম্যাজিস্ট্রেট, শশুরকে হাইকোর্টের বিচারক, স্ত্রীর বড়ভাইকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের এসপি, স্ত্রীর বড়বোনকে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব হিসেবে গ্রামের মানুষের নিকট পরিচয় করিয়ে দেন।
বাড়িতে আসা যাওয়ার সময় গাড়িতে ব্যবহার করতেন ম্যাজিস্ট্রেটের স্টীকার, স্ত্রীর নামে যে ভিজিটিং কার্ড ছিল তাতে লেখা ছিল শারমিন সুলতানা আখি, অ্যাসিসস্ট্যান্ট কমিশনার , এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, বাঞ্চ নং -৫, চট্রগ্রাম এরিয়া বাংলাদেশ।
প্রতিবার বাড়িতে আসলে ২ থেকে ৩ দিন থাকতেন, তখন বাড়িতে আসতো নামীদামি লোকজন। প্রায় প্রতিদিন আয়োজন হতো নানা ভুরিভোজ। এভাবে কয়েক মাস আশা যাওয়ার মধ্যে মানুষ বিশ্বাস করা করা শুরু করেন। এ দিকে সাইফুল তার পরিচিত স্বজনদের মাধ্যমে গ্রামের বহু ব্যক্তিকে চাকুরীরর আশ্বাস দিয়ে টাকা নেয়া শুরু করে।
আবু ইউছুফ কাছ থেকে ১২ লক্ষ, আলআমিনের কাছ থেকে ৬লক্ষ, মোবাশে^রা আক্তারের কাছ থেকে ৫লক্ষ,সুমনের কাছ থেকে ৬ লক্ষ ,নুর মোহাম্মদের কাছ থেকে ১২ লক্ষ এভাবে প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গত জুন মাস থেকে পলাতক রয়েছে। এ দিকে মানুষ চাকুরি আশায় দারদেনা ও সুদে টাকা দিয়ে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
মামলার বাদী আবু ইউছুফ বলেন, সাইফুল স্ত্রীকে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ও তার আত্মীয় স্বজনের পরিচয় দিলেও প্রথম মানুষ বিশ্বাস করেনি। কিন্তু পরবর্তিতে গাড়ীতে ম্যাজিস্ট্রেট স্টিকার, ভিজিং কার্ড থানার ওসিসহ প্রশাসনের লোকজনের আসা যাওয়ায় বিশ্বাস করা শুরু করে। এবং তার চাচা, বাবা, বোন,ভগ্নিপতি,বন্ধুরাসহ সবার কথায় মানুষ চাকুরি প্রলোভনে টাকা দেয়। সে অনেককে ভূয়া জয়েনিং পত্রও দিয়েছে।
প্রতারক সাইফুলের খালা রোকেয়া বেগম, খালু নুর মোহাম্মদ বলেন, সাইফুল ৮ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করে ঢাকায় চলে যায় । এরপর বিদেশ গিয়ে প্রথমে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে মানুষের সাথে প্রতারনা করে। পরে বহু বছর দেশে আসে নাই। এবার স্ত্রীকে নিয়ে এসে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেয়। থানার ওসিহ প্রশাসনের লোকজন আসে। মানুষও বিশ্বাস করে তাকে টাকা পয়সা দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি নাই এবং অনেক লোককে না করেছি। তারপর মানুষ টাকা দিয়েছে।
রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা জানান, সাইফুল ও তার স্ত্রী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে চাকুরির কথা বলে সাধারন মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছে। এ কথা আমি অনেকের কাছে শুনেছি,কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
7Share