মহিউদ্দিন মুরাদ: লক্ষ্মীপুর ভোলা-বরিশাল ফেরি সংকটে যান বাহন পারাপার সহ যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রিয়জনের কাছে পৌঁছাতে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলার যোগে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি জমাচ্ছে। ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর ঘাটটির
স্থান পরিবর্তন করে গোদুড়িয়া যাওয়া ফেরি পারাপারে আট থেকে ১০ঘন্টা সময় লেগে যায়। এতে রুটিন মাফিক ফেরি আবার লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীহাট ফেরিঘাটে পৌঁছাতে পারছেনা। সিড্যুয়েল ঠিক না থাকায় দেশের দূর দূরান্ত থেকে আসা শত শত যাত্রীদের এ ভোগান্তি আরো চরমে পৌঁছেছে। সারাদিনে ভোর বেলায় ৫টা থেকে ছয়টার দিকে দু’টি ফেরি ছেড়ে যাওয়ার পর ফেরত রাত একটা থেকে দেড়টার দিকে। এর পর রাত্রে ফেরি চলাচল থাকে বন্ধ থাকে।
এতে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক যান পারাপার করলেও যাত্রীবাহি বাস ও পন্যবাহি অসংখ্য যান পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে, সদর উপজেলার মজুচৌধুরী হাট ফেরিঘাটে। উক্ত নৌ-রুটে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের ২৩টি জেলার কম দূরত্বের কারনে এ রুটে যাতায়াত করছে। অপরদিকে এখান থেকে কোনো প্রকার লঞ্চ না থাকায় একটি যাত্রী ভোগান্তি বেড়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়িসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যাত্রীবাহি বাস পারাপার না হওয়ায় যাত্রী ভোগান্তি চরমে পৌঁছে।
নারী পুরুষ ও তাদের শিশু সন্তানদের সাথে নিয়ে নদী পারাপারের উপায় না পেয়ে বাধ্য হয়ে প্রতিকুল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ছোট ছোট নৌকা ও ট্রলারে প্রমত্তা মেঘনা পাড়ি দিয়ে সুদূর ভোলা ও বরিশাল জেলাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ২৩টি জেলার লোক এ রুটে পাড়ি জমাচ্ছে। বর্তমান মেঘনার মোহনায় এ সময়ে ডেঞ্জার জোন বলে সরকার অনুমোদিত ব্যতীত যে কোনো নৌ-যান চলাচলে সম্পূর্ণরূপে নিষেজ্ঞা রয়েছে।
এতে যে কোনো বড় ধরণের দূর্ঘটনার সমুহ আশংকা করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে আসা বরিশাল যাওয়ার যাত্রী নূর মোহাম্মদ বলেন, এক বছর দেশে যাচ্ছেন, কিছু না পেলে ঝুঁকি হলে স্ত্রী শিশু সন্তানকে নিয়ে মা বাবার কাছে পৌঁছাতে হবে। এক বছরের শিশু সন্তান নিয়ে খাগড়াছড়ি থেকে আসা সুলতানা বলেন, জীবনের ঝঁকি আছে, কিন্তু ফেরি লঞ্চ কিছুই না পেয়ে উপায় নেই। তাই যেভাবেই হোক ট্রলার বা নৌকা দিয়ে বরিশাল যেতে হবে। তাই কোনো উপায় না পেয়ে নিরুপায় হয়ে অসহায় যাত্রী নৌ-পথে নৌকা এবং ট্রলার যোগে পাড়ি দিচ্ছে। এ সব নৌ-যানের কোনো সরকারী অনুমোদন নেই। নেই কোনো মাথার ছাদ।
আভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন এর লক্ষ্মীপর ভোলা-বরিশাল ফেরি চলাচল, লক্ষ্মীপুর সদর মজুচৌধুরী হাট ফেরিঘাটের সহকারী ম্যানেজার, মো. ফয়সাল বলেন, ফেরিঘাট স্থান পরিবর্তন হয়ে গেদুড়িয়া যাওয়ায় এ পাড়ের ফেরি মজুচৌধুরী ফেরিঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার পর ঘাটে পৌঁছাতে আট থেকে ১০ ঘন্টা সময় লেগে যায়। অনুরূপভাবে সেখান থেকে লক্ষ্মীপুর ঘাটে পৌঁছাতে সমপরিমাণ সময় লেগে যায়। এতে নৌ পথে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। একইভাবে আমরা যাত্রীবাহি বাসগুলো আগে পারাপারের চেষ্টা করি।
এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবী, অনতি বিলম্বে ঢাকার সাথে সরাসরি নৌ চলাচলের জন্য নৌবন্দর ঘোষনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবী জানিয়ে আসছে। সম্প্রতি তৃতীয় বারের মতো নির্বাচিত জননেত্রী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে জেলাবাসীর টেলি কলফারেন্সে এ দাবী আরো জোরালো হয়েছে।
0Share