লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়কের সংস্কার কাজের ধীরগতির কারণে চরম ভোগান্তিত পড়েছে এই রুটে চলাচলকারী কয়েক উপজেলার মানুষ। ফলে স্থানীয়রা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বহুবার। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সড়কের দুই পাশে ধানের চারা রোপনের মাধ্যমে আবারো অনিয়মের প্রতিবাদ করেন।
কয়েকজন পথচারি ও গাড়ির চালকরা জানান, গর্ত আর কাদায় প্রায় সময় গাড়ি আটকে যায়। একটি গাড়ির চাকার নিচে পড়া কাদা ছিটকে পড়ছেন অন্য গাড়ির যাত্রী ও পথচারীদের শরীরে। প্রায় সময় গর্তে পড়ে যানবাহনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভেঙ্গে যায়, আহত হয় যাত্রীরা। এতে করে যথাসময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে পারেন না যাত্রী ও পথচারীরা। তবে এই জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতা ও স্থানীয় প্রশাসনের নজরধারী না থাকা এ অবস্থার সৃষ্টি।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, জেলার অন্যতম ব্যস্ততম সড়কটিতে পুরনো কার্পেটিং তুলে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এটি এখন যানবাহন চলাচলের অনেকটায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আঞ্চলিক এ মহাসড়কটিতে নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় বর্ষার শুরুতই বিভিন্ন স্থানের কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতে জমে যায় কাদা, সরে যাচ্ছে দুই পাশের ফুটপাতের মাটি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্য স্থানে পৌঁছাতে সময় লাগছে ৩ গুন যানবাহনগুলোর।
জানা যায়, রায়পুর থেকে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীর ফেরীঘাট ও চাঁদপুরের হরিণাঘাট দিয়ে প্রতিদিনই এই রুটে চলাচল করে শরীয়তপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও দ্বীপজেলা ভোলার বাসিন্দারা। কিন্তু রাস্তাটির বেহাল অবস্থা হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। স্থানীয় ও পথচারীদের দুর্ভোগ লাগবের জন্য ২০১৮ সালের প্রথম দিকে এ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার ও সম্প্রসারণের জন্য ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। কিন্তু ধীরগতিতে কাজ করায় নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা বিল্ডার্স। ইতিমধ্যে লেয়ার ডেমেজের অজুহাতে সড়ক বিভাগের মাধ্যমে বরাদ্ধ নিয়েছেন আরো ৫ কোটি টাকা, বাড়িয়েছেন নির্মাণের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এদিকে নিম্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস রানা বিল্ডার্স এর ঠিকাদার আজিজুর করিম বাচ্চু মোবাইল ফোনে জানান, বিভিন্ন সমস্যা থাকার কারণে সড়ক সংস্কারে ধীর গতি দেখা দিয়েছে। তাই কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সহসাই সমস্যার সমাধান হবে জানান তিনি।
জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুব্রত দত্ত মোবাইল ফোনে জানান, বৃষ্টির কারণে সংস্কারের কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে শিগগিরই সড়কটি সংস্কারের কাজ শেষ করা হবে বলে জানান। এছাড়াও ফুটপাত ধস ও কার্পেটিং উঠে যাওয়ার বিষয়টি জানেন না তিনি।
0Share