নিজস্ব প্রতিনিধি: মেঘনা নদীর মতিরহাটঘাট থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচেীধুরীর হাট ঘাট পর্যন্ত অসংখ্য ডুবোচর এবং সরু চ্যানেলের কারণে শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় প্রায় দিনই চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা। ফেরি আসা-যাওয়ার সময় ঠিক না থাকার কারণে উভয় পাড়েই লেগে থাকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন।
অথচ এই রুটে কিছুদিন ধরে ফেরি চলছে থেমে থেমে। শীত মৌসুমে নদীর পানি কমে যাওয়ায় ডুবোচরে প্রায় দিনই ফেরি আটকা পড়ে। সেইসঙ্গে ফেরি সংকটে বিড়ম্বনার কবলে পড়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা। এছাড়াও প্রায়ই দুটি ফেরির মধ্যে একটি বিকল হয়ে গেলে স্বাভাবিক ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়। ফলে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ভোলা অংশের ইলিশা ও লক্ষ্মীপুর অংশের মজু চৌধুরীর ঘাটে আটকে থাকে শত শত যানবাহন। যাত্রী ও ট্রাক ড্রাইভাররা জানান, ফেরি আটকে পড়ায় তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুই প্রান্তে বসে থাকতে হয়। এতে করে যানবাহনে থাকা কাঁচামালও প্রায়ই নষ্ট হয়ে যায়।
ভোলার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশের ২১ জেলার সহজ যোগাযোগ মাধ্যম ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুট । স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত দূরত্ব মাত্র ২৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ভোলা থেকে মতিরহাটের দূরত্ব ২০ কিমি পৌছঁতে সময় লাগে ১ ঘন্টা। কিন্তু মতিরহাট ঘাট থেকে ৮ কিমি দূরের লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাটে পৌছঁতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। তাছাড়া মেঘনা নদীর মতিরহাট থেকে মৌজু চৌধুরী এলাকায় দীর্ঘ ডুবোচর এবং চ্যানেলটি সরুর কারণে ওই এলাকা দিয়ে ফেরি-লঞ্চ চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। ভরা জোয়ার না এলে ওই চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলতে পারে না। একটি ড্রেজিং এলেও কাজ চলছে ধীরগতিতে। তাতেও ঠিকমতো মাটি কাটার কাজ চলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ফেরির চালক সফিকুর রহমান জানান, ভোলা থেকে মতিরহাট ও রহমতখালি চ্যানেলের লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত পুরে জায়গাটিতেই পানি কম। ওই স্থান পার হতে গেলে জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় তাদের। মাঝে মাঝে ডুবোচরে আটকে থাকে ফেরি। এছাড়া এতে করে যানবাহনসহ নদীর চরে আটকে থাকায় ফেরির তলা ফেটে যাওয়াসহ ইঞ্জিনের ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। তার মতে, শীত ও গ্রীষ্ম মৌসুমে ফেরি চলার চলের জন্য মজুচেীধুরীর হাটের পরিবর্তে মতিরহাট ঘাটটি উপযুক্ত সমাধান হতে পারে। বর্তমানে ফেরি নিয়ে মতিরহাটের কোল ঘেষে লক্ষ্মীপুরের মজু চৌধুরীরর হাটে পৌছঁতে দেড় ঘন্টা সময় লাগে অথচ মতিরহাট হয়ে এই সময়ে একটি যানবাহন ফেনী পৌছে যেতে পারে। শুধু ফেরি চালকই নয় এই রুটে নিয়মিত চলাচলকারী অনেক যাত্রী ও এ্কই অভিমত ব্যক্ত করেন। তাদের সবার মত ভোলা-লক্ষ্মীপুরের ফেরির রুটটি ভোলা-মতিরহাট ঘাট হলে ডুবোচর সমস্যার সমাধান এবং কমপক্ষে ৩ ঘন্টা সময় বেচেঁ যাবে।
ওই ব্যবস্থা না হলে ডুবোচর কাটার জন্য দুটি ড্রেজিং জাহাজ প্রয়োজন। এদিকে মেঘনা নদীর এ রুটটি চালু হওয়ার পর থেকে এখানে কিশানী ও কুস্তুরী নামে দুটি ফেরি চলাচল করছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ১৯ জানুয়ারি কাকলী নামের আরও একটি ফেরি দিলেও মাত্র চারদিন পর কোনো নোটিশ না দিয়েই বিআইডব্লিউটিএ ফেরিটি নিয়ে যায়। এতে হঠাৎ করেই যানবাহনের চাপ বেড়ে যায়। ফেরি চলাচল সমস্যার কথা স্বীকার করে বিআইডব্লিউটিসি সহকারী ব্যবস্থাপক বাণিজ্য মোঃ সিহাব উদ্দিন বলেন, গুরুপ্তপূর্ণ রুটটিতে স্বাভাবিকভাবে পারাপারের জন্য চারটি ফেরি প্রয়োজন থাকলেও চলছে মাত্র দুটি। রুট চালু রাখার স্বার্থে দ্রুত আরও দুটি ফেরি প্রয়োজন। এছাড়া ড্রেজিংর বিষয় বিআইডব্লিউটিকে জানানো হয়েছে।
0Share