সব কিছু
facebook lakshmipur24.com
লক্ষ্মীপুর বুধবার , ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ , ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
যাত্রীদের দাবি ভোলা-মজুচেীধুরীরহাটের পরিবর্তে ভোলা-মতিরহাট ফেরি রুট

যাত্রীদের দাবি ভোলা-মজুচেীধুরীরহাটের পরিবর্তে ভোলা-মতিরহাট ফেরি রুট

যাত্রীদের দাবি ভোলা-মজুচেীধুরীরহাটের পরিবর্তে ভোলা-মতিরহাট ফেরি রুট

feryসানা উল্লাহ সানুঃ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার যাতায়াতের জন্য ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস রুটটি দূরত্ব এবং সময়ের কারণে বর্তমানে যাত্রীদের কাছে এক দূর্বিসহ রুট হিসাবেই পরিচিত। রুটটির চরম দূর্বিসহ এলাকা লক্ষ্মীপুরের মজুচেীধুরীর হাট থেকে দক্ষিণের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত ডুবোচরে ভরপুর ১০ কিমি দূরত্বের অংশটি। তাই এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের দাবি, বর্তমান ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের পরিবর্তে ১০কিমি নদীপথ কমিয়ে ভোলা-মতিরহাট রুট করা হলে দক্ষিণ পূর্ব ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চ যাতায়াতে পরিবহনে সময় কমে যাবে কমপক্ষে ৩ ঘন্টা সাথে যান চলাচল বেড়ে যাবে কমপক্ষে দ্বিগুন ।

স্থানীয় সূত্র বিভিন্ন সূত্র জানায়, ভোলা থেকে নদী পথে লক্ষ্মীপুরের দূরত্ব (পূর্ব-পশ্চিমে) ১৮ কিমি। কিন্তু ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস সেই ১৮ কিমি পথের জন্য বর্তমানে পাড়ি দেয় ২৮কিমি। যার মধ্যে ভোলার ইলিশা থেকে পূর্ব দিকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মতিরহাট পর্যন্ত ডুবোচর বিহীন ১৮ কিমি পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে ১ ঘন্টা। আবার মতিরহাট থেকে উত্তর দিকে লক্ষ্মীপুরের মজুচেীধুরীরর হাট পর্যন্ত বাকী ১০ কিমি পথ পারাপারে সময় লাগে প্রায় দেড় ঘন্টা। কিন্তু একই সময়ে নদীপথে ভোলা থেকে কমলনগরের মতিরহাট ঘাটে হয়ে যানবাহন গুলো সড়ক পথে মাত্র আধা ঘন্টায় লক্ষ্মীপুরসহ নির্দিষ্ট গন্তব্যে অতি সহজেই আসা যাওয়া করতে পারে।

তাই এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীদের অভিযোগ,যেখানে ভোলা-লক্ষ্মীপুরে যাতায়াতের জন্য মতিরহাট ঘাট হয়েই সড়ক পথ পাওয়া যায়, সেখানে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার জন্য প্রতিকূল সমস্যা জর্জিত ১০ কিমি নদী পথ ব্যবহার কতৃপক্ষের সম্পূর্ন অপ্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত। যার জন্য ঘুরে ফিরে ১০ কিমি নদীপথ ব্যবহার করতে গিয়ে উঠা নামা সহ প্রতি যানবাহনের প্রায় ৩ ঘন্টা সময় অপচয় হচ্ছে।এতে করে একটি যানবাহন ফেরিতেই অতিরিক্ত যে সময় ব্যয় করছে, সেই সময়ে সে ঐ গুলো ফেনী পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে।

সরেজমিনে এই রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও ফেরি সার্ভিসের ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মতিরহাটঘাট থেকে মজুচেীধুরীর হাট ঘাট পর্যন্ত ১০কিমি পথে দীর্ঘ সময় লাগার জন্য মেঘনা নদীর এই অংশের অসংখ্য ডুবোচর এবং সরু চ্যানেল দায়ি। ফেরি সার্ভিসের ড্রাইভার সফিকুর রহমান জানায়, পুরো জায়গাটিতেই ফেরি চলাচলের জন্য পানি কম। ওই স্থান পার হতে প্রায়ই জোয়ারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় তাদের। মাঝে মাঝে ডুবোচরে ফেরি আটকে যায়। এতে করে যানবাহনসহ নদীর চরে আটকে থাকায় ফেরির তলা ফেটে ইঞ্জিনের ক্ষতি হওয়ার আশংকা দেখা দেয়। সর্বশেষ গত ঈদের পরের দিন একটি ফেরি ডুবো চরে তিন দিন আটকে থাকে।

পরিবহন শ্রমিক আমিনুল এবং চিংড়ি পোনা ব্যবসায়ী মাজেদুল বলেন, শীত মৌসুমে নদীতে পানি কমে গেলে বেশির ভাগ সময়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে ফেরি চলাচল বিঘিœত হয়। তখন ফেরিতে বেশি সংখ্যক যানবাহনও পারাপার করা যায় না। এতে যানবাহনের চাপ বেড়ে গিয়ে ফেরিঘাটের সিরিয়াল পেতে এক একটি যানবাহনকে মাঝে মধ্যে ৫-৭ দিন ও অপেক্ষা করতে হয়। যার জন্য নির্ধারিত সময়ে ফেরি গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় প্রায় দিনই চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকসহ ব্যবসায়ীরা। ফেরি আসা-যাওয়ার সময় ঠিক না থাকার কারণে উভয় পাড়েই লেগে থাকে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। এতে করে প্রতিদিনই যানবাহনে থাকা কাঁচামাল নষ্ট হয় । ফলে ফেরি চলাচলের জন্য উক্ত রুটে প্রায়ই ডেজিং করতে হয়।

কিন্তু মেঘনা উপকুলবর্তী কমলনগরের চর কালকিনি ইউপি সদস্য এবং মতিরহাট বাজারের ব্যবসায়ী মেহেদী হাছান লিটন অভিযোগ করে বলেন, শুধু ফেরি চলাচলের জন্য মেঘনার মধ্যবর্তী চর রেখে পূর্বপার্শ্বে মতিরহাট থেকে মজুচৌধুরীর হাট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার জায়গা নিয়মিত ডেজিং করার কারণে মেঘনা নদী ক্রমান্বয়ে ভেঙ্গে পূর্বদিকে সরে আসছে। তার দাবি, ডেজিং না করে এবং ১০ কিমি না ঘুরেই মতিরহাটে ফেরি স্টেশন করলে সময় আর অর্থ বাচাঁর সাথে ভাঙ্গন থেকে কমলনগর রক্ষা পাবে।

এ প্রসঙ্গে এ পথের নিয়মিত যাত্রী এনজিও কর্মী ভোলার মনিরুল ইসলাম এবং কমলনগরের পান ব্যবসায়ী মোঃ শাহাজান বলেন, বর্তমানে ভোলা-মজুচৌধুরীরহাট রুটে ১টি ফেরি দৈনিক ২ বার যাতায়াত করলেও রুটটি পরিবর্তন হয়ে ভোলা-মতিরহাট করা হলে সেখানে ১টি ফেরি দৈনিক ৪ বার যাতায়াত করতে পারবে। তাতে যাত্রীদের যেমন সময় লাগবে কম তেমনি ফেরির সংখ্যা না বাড়িয়ে যানবাহন পারাপারের সংখ্যা বেড়ে যাবে কমপক্ষে দ্বিগুন। প্রতিদিন ফেরির জ্বালানীও বেচেঁ যাবে কয়েক শত লিটার।

ফেরি চলাচলে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রটের মতিরহাট-মজুচৌধুরীরহাট অংশের সমস্যার কথা স্বীকার করে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তা মোঃ সিহাব উদ্দিন বলেন, এই রুটে ৩টি পয়েন্টে মাত্র ৩-৪শ ফুট ডুবো চরের জন্য ৯-১০ কিলোমিটার ঘুরে ফেরি যাতায়াত করতে হচ্ছে। এখন এই রুটটি স্বাভাবিক ও নিয়মিত রাখতে প্রয়োজন কর্তৃকপক্ষের সঠিক ও বাস্তব সম্মত সিদ্ধান্ত।

প্রসঙ্গত, খুলনা-বরিশাল-ভোলা-লক্ষ্মীপুর-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বাস্তবায়নে এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের জন্য ২০০৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরি সার্ভিস চালু করে । এ রুটটি চালুর ফলে ভোলা-লক্ষ্মীপুর হয়ে চট্টগ্রামের সাথে খুলনার দূরত্ব ২শ ৪০ কিলোমিটার কমে যাওয়ায় প্রতিদিন মালবোঝাই শত শত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, কনটেইনার যাতায়াত করছে এই রুটে।

কিন্তু বর্তমানে যাত্রীদের দাবি,এই ভোলা-লক্ষ্মীপুর (মজুচৌধুরীরহাট) রুটটি সামান্য পরিবর্তন করে ভোলা-মতিরহাট করলে কমপক্ষে ৩ ঘন্টা সময় বেঁেচ যাবে। পাশাপাশি মেঘনার ভাঙ্গনের শিকার থেকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা কে ও রক্ষার নব উদ্যোগ গ্রহন করা যেতে পারে।

সমস্যা | প্রত্যাশা আরও সংবাদ

দেবে গেছে মেঘনা তীর রক্ষা বাঁধের ব্লক, আতঙ্কে স্থানীয়রা

রামগতিতে টানা বৃষ্টিতে সড়ক ধসে যান চলাচল বন্ধ

অবৈধ দখল আর দূষণে রামগতির জনগুরুত্বপূর্ণ খালটি প্রায় মৃত

অবৈধ যন্ত্রদানব বন্ধের দাবীতে কমলনগরে সড়ক অবরোধ

গরমের শুরুতে রামগতিতে ভয়াবহ লোডশেডিং, ভোগান্তিতে উপকূলের গ্রাহক

রামগতির চরাঞ্চলের ৩৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

Lakshmipur24 | লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয়ে নিবন্ধিত নিউজপোর্টাল  
 All Rights Reserved : Lakshmipur24 ©2012- 2025
Editor & Publisher: Sana Ullah Sanu
Muktizudda Market (3rd Floor), ChakBazar, Lakshmipur, Bangladesh.
Ph:+8801794822222, WhatsApp , email: news@lakshmipur24.com