প্রবল বর্ষণ ও মেঘনার অধিক জোয়ারের পানিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে করে পানির নিচে প্রায় ৮০ শতাংশ বীজতলা, দুশ্চিতায় কৃষক। অন্যদিকে জলাবদ্ধতায় এলাকাবাসী। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ও বেড়ীবাঁধ না থাকায় অধিক জেয়ারের পানিতে প্রায় ৮০ শতাংশ নষ্ট হচ্ছে আমন ও আউসের বীজতলা।
শেষ মুহুর্তে ধানের বীজও শেষ, এনিয়ে দুশ্চিতায় রয়েছেন উপকূলের কৃষক। অন্যদিকে জলাবদ্ধতা ও নতুন করে বীজতলা তৈরি নিয়ে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন। সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে আজ (১২ আগস্ট) চর আলগী ইউনিয়ন এবং চর পোড়াগাছা ইউনিয়ন এর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এসময় দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য ভুলুয়া নদী এবং বিভিন্ন খালে অবৈধভাবে স্থাপিত বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে এবং মেঘনার বেড়ীবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় একদিকে জলাবদ্ধতা অন্যদিকে বীজতলা থেকে পানি নামছে না। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বীজতলায় পানি জমে থাকায় বাধ্য হয়ে বাড়ি উঠানকে বীজতলা করে ধানের বীজ বপন করছেন অনেক কৃষক। অনেকে বাজারে ধানের বীজের সংঙ্কট থাকায় দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
কৃষক আব্দুল মতিন মিঠু বলেন, ‘বীজতলা এখনো পানির নিচে। বাধ্য হয়ে বাড়ির আঙিনায় বীজতলা তৈরি করেছি।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হযরত আলী জানান, ‘মেঘনার অধিক জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে এ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমন ও আউস ফসলের বীজতলা। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
বীজতলা ক্ষতিগ্রস্থের বিষয়ে রামগতি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সাঈদ তারেক বলেন, ‘বৃষ্টিতে এবং অধিক জোয়ারের পানিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়া কৃষকদেরকে বীজের ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দেন। এখন শেষ মৌসুমে ধানের বীজও শেষ, চাহিদা পাঠানো হয়েছে। বীজতলাগুলো থেকে পানি সম্পূর্ণ সরে গেলে পুরোপুরি ক্ষয়-ক্ষতির তথ্য বলা যাবে। এছাড়া কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন জানান, ‘বৃষ্টিতে এবং অধিক জোয়ারের পানিতে উপজেলার প্রায় ৮০ শতাংশ জমির বীজতলা নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাকে নিয়ে বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরির্দশন করেছি। দ্রুত বীজতলার পানি না নামলে আসন্ন আমন মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হতে পারে।এতে কৃষি উৎপাদন তথা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটা বড় প্রভাব ফেলবে। তাই প্রয়োজনে বিকল্প বীজতলা তৈরির বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করতে কৃষি দপ্তরকে অনুরোধ করা হবে।’
মিসু সাহা নিক্কন, বার্তা/24
0Share