ডেস্ক: বাংলাদেশ সরকার মঙ্গলবার দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বাঁধ উন্নয়ন বিষয়ক এক প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংকের অঙ্গ সংগঠন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার(আইডিএ) সঙ্গে ৪০ কোটি ডলারের একটি আর্থিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। প্রকল্পের ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার দেবে আইডিএ। বাকি ২৫ লাখ আসবে বিশ্বব্যাংকের জলবায়ু বিষয়ক তহবিল থেকে। এই চুক্তির আওতায় গ্রহীত প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের উপকূলীয় বাঁধগুলোর উন্নয়ন এবং উপকূলের সমুদ্রবাহিত নিচু এলাকাগুলোকে বন্যা ও ঝড়ের হাত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ছয়টি উপকূলীয় জেলা যেমন, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষিরা, বরগুনা, পটুয়াখালি ও পিরোজপুরের ১৭টি নিম্নাঞ্চলে ৬শ কিলোমিটার বাঁধ উন্নত করা হবে।
এর ফলে এসব নিচু এলাকার সাত লাখ ৬০ হাজার অধিবাসীকে বাঁধের আওতায় আনা সম্ভব হবে। বিশ্বব্যাংকের এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের আশি লাখ মানুষ বন্যা ঝুঁকির মধ্যে বেসবাস করছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা এক কোটি ৩৫ লাখে উন্নীত হবে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এর সঙ্গে যুক্ত হবে আরো ৯০ লাখ মানুষ। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখার ভারপ্রাপ্ত প্রধান ক্রিস্টিনে ই কিমেস এ সম্পর্কে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি কেবল পরিবেশ সংক্রান্ত ইস্যু নয়। এটি এখন অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দারিদ্র দূরীকরণের ক্ষেত্রে মৌলিক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকাগুলো যেখানে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং জলচ্ছাসের ঝুঁকি রয়েছে জরুরিভিত্তিতে সেখানকার বাঁধ ব্যবস্থা উন্নতকরণ প্রয়োজন। এই প্রকল্পটি উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে ঘূর্নঝড় ও বন্যা থেকেই রক্ষার পাশাপাশি কৃষিজমির পরিমান বাড়িয়ে তাদের দারিদ্রতা হ্রাসেও সহায়তা করবে। ছয়টি জেলায় বসবাসকারি সাড়ে আশি লাখ মানুষ কৃষি উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং খাদ্য নিরাপত্তার মাধ্যমে এ প্রকল্পটি থেকে সারাসরি লাভবান হবে। এদিকে বাংলাদেশ সরকারেরর অর্থনীতি বিষয়ক বিভাগের সচিব জনাব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ প্রকল্পটি উপকূলে ঝুঁকির মুখে থাকা লাখ লাখ মানুষকে রক্ষা করবে।’সরকারের দীর্ঘমেয়াদি এই উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে গোটা উপকূলের বাঁধ ব্যবস্থা উন্নত হবে। আর এটি সফলভাবে পরিচালিত হলে এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার বাংলাদেশের পক্ষে অর্থসচিব আবুল কালাম আজাদ এবং বিশ্বব্যংকের পক্ষে ক্রিস্টিনে ই কিমেস চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করেন।
একটি বিশেষ সূত্র লক্ষ্মীপুর টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্ছলের ৬টি জেলার ১৭টি নিম্নাঞ্চলের ৬শ কিলোমিটার উন্নত বাঁধ তৈরি করা হলেও নদী ভাংগা কবলিত এবং মেঘনার অরক্ষিক্ত রামগতি ও কমলনগর এই প্রকল্পে অন্তভুক্ত নেই। সূত্রটি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই প্রকল্প থেকে সত্যিই যদি রামগতি ,কমলনগর বাদ যায় তবে তা হবে এ অঞ্চলের রাজণীতিবিদদের জন্য বড় রকমের ব্যর্থতা।
0Share