জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় নদী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলাধীন বড়খেরী ও লুধুয়াবাজার এবং কাদের পণ্ডিতের হাট এলাকা ভাঙ্গন হতে রক্ষাকল্পে মেঘনা নদীর তীর সংরক্ষণ’ নামের প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য হবে ৩১ কিলোমিটার। যা শেষ করতে প্রয়োজন হবে ৩ হাজার ৮৯.৯৭ কোটি টাকা ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিব।
অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ আগষ্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মেঘনার ভাঙন রক্ষাকল্পে রামগতি ও কমলনগরের জন্য ১৩’শ কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করেছিল একনেক। কিন্ত পরে ওই প্রকল্পের অধীন নদী তীর সংরক্ষণ (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক ১শ ৯৮ কোটি ২ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সে প্রকল্পটি শেষ হয়।
সে প্রকল্পটি অধীন রামগতির লঞ্চঘাটে ১ কিমি, আলেকজান্ডার আসলপাড়া লঞ্চঘাট থেকে শুরু করে হাসপাতাল পার হয়ে পুর্ব আলেকজান্ডার মন্তাজ পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে ভেঙে যাওয়া স্কুল পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিমি কিলোমিটার এবং কমলনগরের মাতব্বরনগর এলাকায় ১ কিমি বেঁড়িবাঁধ হয়।
২০১৮ সালে সে প্রকল্পটি বাতিল করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। গোপনে সে প্রকল্পটি বাতিল হলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত রামগতি কমলনগরের মানুষ তা জানতো না। এলাকার মানুষ জানতো প্রকল্প চলছে হয়তো কিন্ত অর্থ নেই। সে কারণে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি হিসেবে বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব) আবদুল মান্নান বিভিন্ন জনসভায় মেঘনার ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কাজ চালু করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্ত তার কয়েকদিন পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি জানতে পারেন, প্রকল্পটি বাতিল হয়েছে বহু আগে।
২০১৯ সালে বর্তমান সাংসদ প্রথম দিন কমলনগরের মাতব্বরহাট পরিদর্শনে গেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লক্ষ্মীপুর জেলা কর্মকর্তারা জানান, পূর্বের কোন প্রকল্প নেই। সেদিন এ প্রতিবেদকও উপস্থিত ছিলেন। এরপর হাজিরহাট উপকূল কলেজে আয়োজিত এক সভায় স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সাংবাদিকদের সাংসদ পূর্বের প্রকল্প যে বাতিল হয়েছে তার প্রমাণসহ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তারপর থেকে কমলনগর-রামগতির জন্য নতুন প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়। যার প্রেক্ষিতে আজ ১ জুন ২০২১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল একনেক সভায় নতুন এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
0Share