ভাঙনকবলিত এলাকার কয়েকশত বাসিন্দা নদীপাড়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় স্বজনহারাদের মতো পুরো এলাকায় আবেগ ঘন পরিবেশ তৈরি হয়। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে মেঘনা নদীর ভাঙন রোধে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
মেঘনা নদী যাতে এলাকাবাসীর প্রতি সদয় হয় এমন উদ্দেশ্যে কমলনগরের চরফলকন ইউনিয়নের লুধুয়া এলাকায় দোয়ার আয়োজন করে “কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চ” নামের একটি সামাজিক সংগঠন।
এ সময় দোয়া পরিচালনা করেন কমলনগর উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা গিয়াস উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন, কমলনগর রামগতি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক আবদুস সাত্তার পালোয়ান, সংগঠনের উদ্যোক্তা ইমরান হোসেন শাকিল প্রমুখ।
স্থানীয় কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বাজেটে বরাদ্দকৃত টাকা ছাড় না পাওয়ায় বালু সংকটের অজুত দেখিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো নদী বাঁধ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে। অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ জানান, বালু সংকট ও বরাদ্দের টাকা ছাড় না হওয়ায় দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ ছিল। তাছাড়া বরাদ্দটি এত দিন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে ছিল। এখন বরাদ্দটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে আনা হয়েছে। এখন খুব শিগগিরই ফের কাজ শুরু করা যাবে বলে জানান তিনি।
স্থানীয় ভাবে জানা যায়, দীর্ঘ তিন দশকের বেশি সময় ধরে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে প্রায় আড়াইশ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে।
এমতাবস্থায় স্থানীয়দের ব্যাপক আন্দোলন ও দাবীর প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ১ জুন একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৩১ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষা বাঁধের জন্য প্রায় ৩১শ’ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেন।
গত ৯ জানুয়ারি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক কমলনগরের সাহেবেরহাট ইউনিয়নের মেঘনা এলাকায় কাজের উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর আর কোন কাজ হয়নি। এর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী প্রকল্পের ২ বছর অতিবাহিত হচ্ছে।
নদী বাঁধ নিয়ে আন্দোলনরত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এখনো যদি নদী বাঁধের কাজ শুরু না করা হয় তবে বিলীন হয়েছে যাবে এ দু উপজেলার কয়েক লাখ বাসিন্দা। দোয়া অনুষ্ঠানের পর তিনি বলেন, নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেতে আমরা মহান আল্লাহর কাছে হাত তুলেছি। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আমাদের নদীভাঙন রোধে মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। দ্রুত সেই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
0Share