কাজল কায়েস: ‘আই এম কোভিড উইনার’ এই বাক্যটি বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্বের সবচেয়ে আনন্দদায়ক বাক্য। হাজার হাজার করোনা আক্রান্ত রোগী প্রতিনিয়তই এই বাক্যটি বলতে চাচ্ছেন। কিন্তু যিনি করোনাযুদ্ধে জিতে যান তিনিই বলতে পারেন ‘আই এম কোভিড উইনার’। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ মৃত্যুও আজ আতঙ্কে রূপ নিয়েছে। মৃত ব্যক্তির গোসল থেকে শুরু করে দাফন নিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। এর থেকে মুক্তি পেতে যে যার অবস্থান থেকে মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছেন।
শনিবার (১৬ মে) লক্ষ্মীপুরে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নাছিরুজ্জামানসহ ৯ জন করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। সুস্থ হয়ে ওই চিকিৎসক কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ত্যাগ করার সময় ‘আই এম কোভিড উইনার’ লিফলেট উঁচু করে ধরে বিশ্ব জয় করার আনন্দ উপভোগ করেন।
একই হাসপাতাল থেকে সুস্থ হওয়া একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মার্কেটিং অফিসার তারেক চৌধুরীও জয়ের উল্লাস নিয়ে বাড়ি ফেরেন। করোনাযুদ্ধে জয়ীদের করতালির মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়ে পবিত্র কোরআন উপহার হিসেবে তুলে দেয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
এদিকে যারা এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অভিজ্ঞতা খুবই বেদনাদায়ক। গত ১০ মে নমুনা পরীক্ষায় লক্ষ্মীপুর সদর আসনের এমপি একেএম শাহজাহান কামালের এপিএস বায়েজীদ ভূঁইয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এখন তিনি বাসায় একাকীত্বে রয়েছেন।
তার ভাষ্যমতে, তার অবস্থান এখন কনডেম সেলের আসামিদের মতো। যেকোনো সময় তার ফাঁসি হতে পারে। রোগটি তার শরীরকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরেছে যে শরীরে শিং মাছের কাঁটা পুষ করলে যেমন ব্যথা অনুভব হয়, ঠিক তেমন অনুভব করছেন বায়েজীদ ভূঁইয়া। এমপি শাহজাহান কামালের খাদ্য সামগ্রী মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। প্রতিদিনই তিনি মহান আল্লাহর কাছে রোগমুক্তি কামনা করছেন, পরিচিতদের কাছে দোয়া চাচ্ছেন।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, শনিবার জেলার রামগঞ্জে তিনজন, রামগতিতে চারজন ও কমলনগর উপজেলায় দুইজন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর মধ্যে রামগতির চারজনই হোম আইসোলেশনে থেকে সুস্থ হয়েছেন। এনিয়ে জেলায় ৮৮ জন রোগীর মধ্যে ৩৪ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ৫৪ জন রোগীকে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ জন হাসপাতালে ও ৩৪ জন হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ জেলায় প্রথম দিকে এক মৃত ব্যক্তির করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফ্ফার বলেন, জেলার ১ হাজার ৬৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৮৮ জনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে বাকি রোগীদের চিকিৎসা অব্যাহত রয়েছে।
0Share