এমআর সুমন, রায়পুর : চরম দরিদ্রতায় ঘর না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্যের গোয়াল ঘরেই বসবাস করতে হচ্ছে সালেহা খাতুন নামের বয়স্ক এই বৃদ্ধাকে। অভাবের তাড়নায় আপন ভাই আলাদা করে দিয়েছেন এই বৃদ্ধা বোনকে। বর্তমানে ভিক্ষার টাকায় জুটলে পেটে খাবার পড়ে, অন্যথায় নয়! এমন পুরিস্থিতিতে কখনো কখনো তাকে উপবাস বা একবেলা খাবার খেয়ে দিন কাটাতে হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সালেহার স্বামী প্রায় ২০ বছর আগে মারা যান, কোনো সন্তানও নেই। এক ভাই আছেন। সেও দিনমুজর। চরম কষ্টে থাকার পরও ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই সালেহার। গত ১৫ দিন ধরে বৃদ্ধ সালেহা খাতুন (৬০) রায়পুর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের পূর্বলাচ গ্রামের রাস্তা ও পুকুরের পাশে অন্যের ছোট্ট একটি গোয়ালঘর বসবাস করছেন। এতে তিনি শৌচাগার, টিউবওয়েল, খাদ্য ও বস্ত্রের অভাবে সীমাহীন কষ্ট করছেন।
প্রতিবেশী গোয়ালঘরের মালিক চাঁন মিয়া বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর একটা সময়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করলেও এখন বয়সের ভারে আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না তিনি। কোন ছেলে-মেয়ে না থাকার ফলে প্রতিবেশিদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। চলাফেরা করতে পারলেও পরিশ্রম করতে পারেন না। আমরা তাকে অনেক কষ্ট করতে দেখি। কয়েক মাস ধরে আমাদের পরিত্যক্ত একটি ঘরে বসবাস করছিলেন। ওই ঘরের মালিক আমার বড় ভাই সেখানে তার পরিবার নিয়ে বসবাস করায় তিনি নিজ ইচ্ছায় আমাদের ঘোয়ালঘরে ঠাঁই নিয়েছেন।
কান্না জড়িত কন্ঠে সালেহা খাতুন বলেন, ভিক্ষা করে দিনে যা আনি তাই খাই, না আনলে না খাই। কেউ যদি একমুট দেয় তাইলে খাই আর না দিলে না খেয়ে থাকি। জায়গা-জমি না থাকায় নিজের কোন ঘর নেই। স্বামী ও সন্তান না থাকায় ঘরের কথাও চিন্তা করিনি। তবে বেশ বসয়ে এসে গোয়ার ঘরে থাকতে হবে এটাও ভাবিনি।
এ বিষয়ে স্থানীয় কমিশনার আবু নাসের বাবু বলেন, তার কষ্টের কথা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। গরুর ঘরে বৃদ্ধা মানবেতর জীবনযাপনে ব্যপারে পৌর সভা থেকেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন দাশ বলেন, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। খোঁজ খবর নিয়ে তাকে সরকারি সুযোগ সুবিধা দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
0Share