কামরুল হাসান হৃদয় | তিন টাকার সিঙারায় পেটভরে তৃপ্তি পান স্কুল-কলেজের শত শত শিক্ষার্থী। দাম বাড়েনি গত ১৭ বছরে। কারণ একটাই-‘এটা আমার ঐতিহ্য’, বললেন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাইশমারা এলাকার চা দোকানি মো. স্বপন (৫৫)।
বাইশমারা মডেল একাডেমি সংলগ্ন তার ছোট্ট দোকানটিতে সকাল হলেই ভিড় জমে শিক্ষার্থী আর এলাকাবাসীর। চায়ের কাপের সঙ্গে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে স্বপনের সিঙারার সুনাম। প্রতিদিন ভোরে উঠে তিনি বানান পাঁচ থেকে ছয় শ সিঙারা। ঘণ্টা দুই-তিনেকের মধ্যেই শেষ।
স্বপনের দোকানের পাশেই রয়েছে বাইশমারা মডেল একাডেমি, লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এবং উত্তর লাহারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই তিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছে স্বপনের সিঙারা যেন টিফিনের অনিবার্য অংশ।
লক্ষ্মীপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন বলেন, স্বপন আঙ্কেলের সিঙারার আলাদা একটা ঘ্রাণ আছে। টেস্টও দারুণ। সবচেয়ে বড় কথা, তিন টাকায় এত ভালো কিছু পাওয়া যায়-বিশ্বাসই হয় না অনেকের। আমরা তো নিয়মিত খাই।
স্বপন বলেন, ইচ্ছে করলেই সিঙারার দাম ৫-৬ টাকা নিতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই আমার দোকানে এসেই গরিব-ধনী সব মানুষ সমানভাবে খেতে পারুক। এটা আমার বিশ্বাস, আমার আত্মতৃপ্তি।
দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে একাই দোকান সামলাচ্ছেন তিনি। আঠিয়াতলী গ্রামের এই বাসিন্দা ১৫নং লাহারকান্দি ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে থাকেন। সংসার চালান এই দোকান দিয়েই।
স্বপনের তিন সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেছেন দালাল বাজার ডিগ্রি কলেজ থেকে। মেয়ে পলিটেকনিকে প্রথম বর্ষে আর ছোট ছেলে পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। তিনি বলেন, তাদের লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করতে চাই। এটাই আমার স্বপ্ন।
0Share