মনির হোসেন রবিন: লাবনী হেয়ার কাটিং। নামটা শুনে অনেকের মনে হবে কোনো নাম করা সেলুন দোকান। না এটা না এটা দেলোয়ারের ভ্রাম্যমান ( মোবাইল) সেলুন।এক সময় গ্রাম বাংলায় দেখা যেতো বাড়ী বাড়ী এসে নাপিতেরা মানুষের চুল ও গোপ কেটে আসতো, কিন্তু এখন বিভিন্ন নামি দামি সেলুন হওয়ায় আগেকার সেই দৃশ্য দেখা যায় না। কিন্তু অভাবের তাড়নায় ৪ বছর ধরে সেই কাজ করে আসছে দালাল বাজার ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন (৫০) । দেলোয়ার হোসেনের বাবা, মা ভাই বোন কেউ নেই। স্ত্রী ও দুই সন্তানের ছোট পরিবার ।
১৯৭৬ সালে চট্রগ্রামের ভাটিয়ারি হাজী মোবারক আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। সেই সময় অভাবের তাড়নায় আর পড়া লেখা করতে পরেন নি। মানুষের বাড়িতে গৃহশিক্ষক হিসাবে পার করেছেন ৭ বছর। চট্রাগ্রাম থেকে চলে আসেন নিজ গ্রামের বাড়িতে। টাকা পয়সা না থাকায় ভাড়া রিক্সা চালিয়েছেন ৫ বছর।পরে নিজে তৈরী করেন একটি কাঠের রিক্সা।
দেলোয়ারের লাবনী হেয়ার কাটিং। লক্ষ্মীপুর। রায়পুর pic.twitter.com/SlfgDy0imI
— lakshmipur24.com (@lakshmipur24) December 11, 2016
তার ইচ্ছে ছিল ছোট একটা চায়ের দোকান দিবেন। কিন্তু তার কাছে কোন টাকা পয়সা ছিল না। প্রতিবেশিদের কাছে ধার চেয়েছিলেন কিন্তু কেউ দিল না। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন নিজের তৈরী কাঠের রিক্সায় মানুষদের সেবা দিবেন। আর চালিয়ে যাবেন জীবন সংগ্রাম। তার সাথে কথা বলে আরো জানা যায় এই রিক্সা দিয়ে শহরের বিভিন্ন যায়গায় গিয়ে মানুষের কাজ করেন তিনি। মানুষের চুল কাটতে ৩০-৪০ টাকা, আর সেভ করতে ২০ টাকা নেন তিনি। মানুষ আমার কাছে চুল কাটতে আসে।আর আমি আনন্দের সাথে চুল কাটি। এই কাজ করতে খারাপ লাগেনা? এমন প্রশ্ন করতেই তিনি উত্তর দেন কাজ তো কাজই কোনো কাজই ছোট না।
0Share