চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেল: বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী রাজনীতির জন্য এক উর্বর ভূমি।আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগি সংগঠনগুলো যার যার ক্ষেত্রে সাফল্যময়। কিন্তু এত সত্ত্বেও কেন্দ্রিয় আওয়ামী রাজনীতিতে লক্ষ্মীপুর যেন অবহেলিত। আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কোন সংগঠনেই কেন্দ্রিয় পর্যায়ে যেন লক্ষ্মীপুর কে যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না।এমনকি সদ্য ঘোষিত আওয়ামীলগের কমিটিতে লক্ষ্মীপুর জেলার কোন উল্লেখযোগ্য পদ নেই। তাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী পরিবারে লক্ষ্মীপুরের মূল্যায়ন দেখে অনেকটা হতাশ হয়ে কেন্দ্রিয় আওয়ামীলীগের নেতাদের উদ্দেশ্যে নিজরে ফেসবুক একাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সদায় প্রফুল্ল উদিয়মান তারণ্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেল। তার লেখাটি পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো।
আওয়ামী রাজনীতিতে এক অবহেলিত জেলা লক্ষ্মীপুর। পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী, চাঁদপুর, ফেনী এবং বরিশাল। যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবকলীগসহ কেন্দ্রীয় নেতা এবং এমপি মন্ত্রীতে ভরপুর। কিন্তু অবহেলিত সব সময় আমাদের লক্ষ্মীপুর।
তারপরেও নিজ গতিতে ছুটে চলে জয় বাংলার শ্লোগান নিয়ে হাজারো বঙ্গবন্ধু প্রেমী। তাদের একজন এম এ মমিন পাটোয়ারী। লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের এক স্কুল শিক্ষকের ছেলে তিনি। এসএসসি এবং এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তারপর শুরু হয় জীবনের আরেক অধ্যায়।ছোটবেলায় বাবার মুখে বঙ্গবন্ধুর গল্পশুনে বঙ্গবন্ধু প্রেমী হয়ে উঠেন। যার পূর্ণতা পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতি করে।
শিক্ষকের সন্তান বলে বাড়ি থেকে খুব বেশী হাত খরচের টাকা আসতোনা এবং ছোটবেলা থেকে কখনো পরিবারের অর্থের উপর নির্ভর ছিলনা। একদিকে ছাত্রলীগের রাজনীতি, অন্যদিকে নিজের থাকা খাওয়া। শুরু করে টিউশনি সেই পুরাতন অভিজ্ঞতা নিয়ে আর সেই টাকা দিয়ে চলে রাজনীতি এবং পেটনীতি।
ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে শুরু, ক্রমান্বয়ে ইউনিয়ন, উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা। তারপর নাম লিখায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কমিটিতে। তার পরিশ্রম এবং নেতৃত্বপূর্ণ রাজনীতি আকৃষ্ট হয় সিনিয়র নেতারা। আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে উঠেন শেখ হাসিনা, ওবাদুল কাদের, এনামুল হক শামীমসহ বড় বড় অনেক নেতার।
এক পর্যায়ে,প্রার্থী হোন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কমিটির কিন্তু পূর্ণ যোগ্যতা সর্মথন থাকা শর্তেও বাদ পড়েন। কারন বাড়ি লক্ষ্মীপুর। তারপরেও নেত্রীর সুদৃষ্টিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শামীম-পান্না ভাইয়ের কমিটিতে কার্যনির্বাহী সদস্য।
এরপর বিএনপি বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে লিয়াকত-বাবু ভাইয়ের সাথে গ্রেপ্তার হোন সুধাসদন থেকে। পরবর্তীতে লিয়াকত-বাবু ভাইয়ের কমিটির সমাজসেবা সম্পাদক। হওয়ার কথা ছিল ভাইস কিংবা জয়েন। কিন্তু বাড়ি যে লক্ষ্মীপুর!!! তারপরেও থেমে যাননি, নেত্রীর প্রতি প্রচণ্ড আস্থা বিশ্বাস নিয়ে পথ চলতে থাকলেন। এরপর এলো বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন, প্রার্থী হলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কিন্তু এইবার বাধাঁ হয়ে দাঁড়ালো বয়স আর সবই ছিলো পরিপূর্ণ। তারপর ছিটকে পড়লেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে।
কিন্তু ছিটকে পড়েনি রাজপথ থেকে। একদিকে নিজ জেলায় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত আর অন্যদিকে ঢাকার রাজপথে আন্দোলন। দুইটো চালিয়ে গেলেন একসাথে। যা আজও চলমান এবং আমরা পাচ্ছি তার দীক্ষা। পর্রবতীতে নেত্রীর সুদৃষ্টিতে প্রথম ৭৩ জনের সহ-সম্পাদকের সাথে তার নাম উঠে এলো।সাথে সাথে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া আদায় এবং নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ।
তাই,প্রিয় নেত্রীর প্রতি আকুল আবেদন এবং ওবাদুল কাদের ভাইয়ের নিকট অধিকার নিয়ে বলছি…
মমিন পাটোওয়ারীর রাজনীতির ত্যাগ শ্রম এবং যোগ্যতা কিছুই আপনাদের অজানা নয়। যিনি সংগঠনের বাহিরে কিছুই চিন্তা করতেন না।যাকে কোন লোভ লালসা স্পর্শ করতে পারেনি আজও। যিনি সকল দুঃসময়ে তীব্র প্রতিবাদী এক কর্মী।শুধু তার অপরাধ তার জন্ম লক্ষ্মীপুর আর আমি মনে করি এই সাবেক ছাত্রনেতার যোগ্য মূল্যায়নের পূর্ণ আশাবাদী আপনাদের নিকট কারন বর্তমান লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্রলীগের সফলতার একজন শিক্ষক তিনি।
লেখক: চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেল, সভাপতি ছাত্রলীগ, লক্ষীপুর।
0Share