জিয়া চৌধুরী, ঢাকা: বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)’র উদ্যোগে ২শ ৩৩ মেধাবী শিক্ষার্থীদের সাথে লক্ষ্মীপুরের মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন ও নাজনীন সুলতানার গলায় পরিয়ে দেওয়া হলো ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে যারা এই পদক অর্জন করেছেন তাদের পদক ও সনদ তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ওই দুই বছরে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বর ও সিজিপিএ-প্রাপ্ত ২শ ৩৩ জন মেধাবী ছাত্রছাত্রী প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পেয়েছেন। ২০১৩ সালের জন্য ১শ ১০ জন এবং ২০১৪ সালের জন্য ১শ ২৩ জন কৃতী শিক্ষার্থী স্বর্ণপদক পেলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যানরা, ইউজিসির বর্তমান ও সাবেক সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, স্বর্ণপদকপ্রাপ্তদের অভিভাবকরা এবং ইউজিসির কর্মকর্তারা এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন: লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার যাদৈয়ার ছেলে মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে স্নাতক শেষ করেন ২০১৪ সালে। বাবা মোহাম্মদ আবদুল লতীফ লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি তার বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম ও ফ্যাকাল্টিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক-২০১৪’র জন্য মনোনীত হন।
প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের মোহাম্মদ নাছের উদ্দিন: pic.twitter.com/JAnwWIVLMj
— lakshmipur24.com (@lakshmipur24) March 22, 2017
এছাড়াও তিনি ইউজিসি মেরিট স্কলারশিপ-২০১৫ পুরস্কারও জিতেন। মোহাম্মদ নাছের উদ্দীনবর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল গবেষক। পাশাপশি গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করছেন ইউজিসির কলা ও মানবিক বিষয়ক গবেষণা প্রকল্পে।সাথে গ্রাজুয়েট পাবলিকেশন্স-এর প্রধান নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। মোহাম্মদ নাছের উদ্দিনের রচিত, অনুদিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা প্রায় ৩০টি। ২০১৩ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ পাঠাগার সম্প্রসারণ প্রকল্পে তাঁর অনুদিত ও সম্পাদিত বই শ্রেষ্ঠ বই হিসেবে নির্বাচিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের নাজনীন সুলতানা: প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পাওয়া আরেক কৃৃতি শিক্ষার্থী নাজনীন সুলতানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। বাবার রেলওয়ের চাকরির সুবাদে শৈশবটা কেটেছে ঢাকায়। ২০১০ সালে নাজনীন সুলতানা ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ‘ঘ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষায় বিভাগ পরিবর্তন করে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অর্ন্তভূক্ত উন্নয়ন অধ্যয়ন (ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ) বিভাগে চলে আসেন নাজনীন সুলতানা।
প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক প্রাপ্ত লক্ষ্মীপুরের নাজনীন সুলতানা pic.twitter.com/2fe56n1JNi
— lakshmipur24.com (@lakshmipur24) March 22, 2017
২০১৩ সালে স্নাতক পরীক্ষায় বিভাগে প্রথম হন নাজনীন সুলতানা। পরে জানতে পারেন শুধু উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগেই নয়, পুরো সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদেই তিনি প্রথম হয়েছেন। ভালো ফলাফলের জন্য বেশ কয়েকটি বৃত্তির পাশাপাশি ‘ডিন’স এওয়ার্ড’, ‘ইউজিসি স্কলারশিপ’ পান তিনি এবং ‘প্রধানমন্ত্রীর স্বর্ণপদক’ এর জন্য মনোনীত হন। ২০১৪ সালে স্নাতকোত্তর পাশ করেই পরের বছরের ১ নভেম্বর প্রভাষক হিসেবে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে যোগ দেন নাজনীন সুলাতানা।নাজনীনের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হচ্ছে উচ্চতর শিক্ষার জন্যে বিদেশে পাড়ি জমানো। তার জীবনের সবচেয়ে ভালোবাসার মানুষ বাবা গতবছর পরপারে চলে গেছেন।তাই প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক টা তিনি প্রয়াত বাবা কে উৎসর্গ করেছেন।
0Share