নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের সদর হাসপাতালে ব্রাকের (যক্ষ্মা) স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনারে ভেজাল খাওয়ার সরবরাহের দায়ে নাছির বিরানী হাউজে সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় ভোক্তা অধিকার আইনে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের দুই লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৩ মাসের জেল দেওয়া হয়েছে।
বুধবার বিকেলে ভ্রাম্যামাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: নুরুজ্জামান আদালত বসিয়ে এ রায় প্রদান করেন। এ সময় জেলা সিভিল সার্জন গোলাম ফারুক ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: নুরুজ্জামান জানান, ভেজাল খাওয়ার সরবরাহ করার কারণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন আইনের ২০০৯ এর ৫৩ ধারায় খাবার সরবরাহকারী নাছির বিরানী হাউজ নামের প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা ও প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা: গোলাম ফারুক ভুঁইয়া জানান, ব্র্যাক আয়োজিত (যক্ষ্মা) স্বাস্থ্য বিষয়ক সেমিনারের নাছির বিরানী হাউজের সরবরাহকৃত বিরানী খেয়ে সদর হাসপাতালের ৮ ডাক্তার ও তাদের পরিবারের সদস্য ও শিশুসহ অন্তত ১৮জন অসুস্থ্য হয়েছেন। এর মধ্যে সকালে স্থানীয় উপশম হসপিটালের আয়া পারুল বেগমর স্বামী লিটন মারা গেছেন। মৃত লিটন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগরের বাসিন্দা ও লক্ষ্মীপুর উপশম হাসপাতালের আয়া পারুল বেগমের স্বামী।
অসুস্থ্য চিকিৎসকরা হলেন, ডা. ইকবাল হোসেন, ডা. সালাউদ্দিন পাটোয়ারী, ডা. খালেদ, ডা. ওমর ফারুক, ডা. চিন্ময় সাহা, ডা. বনি আদম, ডা. ইকবাল হোসেন এবং সেবিকা চিনু ও ডা. নারগিজের সহকারী, ডা, কমলা শিষ রায়ের ছেলেসহ ১৮জন।
আয়া পারুল বেগম জানান, ওই সেমিনার থেকে পাওয়া একটি বিরিয়ানীর প্যাকেট একজন ডাক্তার আয়া পারুল বেগমকে দেয়। পারুল বিরিয়ানীর প্যাকেট বাড়ি নিয়ে স্বামীকে খাওয়ান। এরপর রাতে লিটন ডাইরিয়াসহ বমি করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে সকাল ৮টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান তিনি। লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন মৃত্যুর বিষয়টির সত্যতা জানিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল সেমিনার কক্ষে ব্র্যাক স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি সেমিনারের দুপুরে আপ্যায়ন করানো হয়। এরপর থেকে আমাদের ১০ জন চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশস্কাজনক হলে তাদের সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরোও জানান, ১০ জনের মতো আমাদের এখানে ভর্তি আছে এবং ১৮ জনের মতো অসুস্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ব্র্যাক আয়োজিত (যক্ষ্মা) স্বাস্থ্য বিষয়ক একটি সেমিনারের নাছির বিরানী হাউজের সরবরাহকৃত বিরানী খাওয়ার পর উপশম হাসপাতালের আয়া পারুল বেগমের স্বামী লিটনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সদর হাসপাতালের ৮ ডাক্তার ও তাদের পরিবারের সদস্য ও শিশুসহ অন্তত ১৮জন ডায়রিয়া ও বুমিসহ অসুস্থ্য হয়ে সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি হয়।
0Share