নিজস্ব প্রতিনিধি: তীব্র গ্যাস সংকটে পড়েছে লক্ষ্মীপুরবাসী। উৎপাদন কমে আসছে শিল্প কারখানায়, দিনের বেশিরভাগ সময় বন্ধ থাকছে ফিলিং স্টেশনগুলো। নোয়াখালীর সুন্দরপুর গ্যাস ক্ষেত্র বন্ধ থাকায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় এই সংকট বলছেন সংশ্লিষ্টরা।কয়েক মাস ধরেই লক্ষ্মীপুরে দেখা দিয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। রাত ১১টার পর গ্যাস পাওয়া গেলেও সকাল হওয়ার আগেই তা ফুরিয়ে যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহকরা। গৃহস্থলী কাজে বিকল্প জ্বালানী হিসেবে কোরোসিন ও লাকড়ির চুলা ব্যবহার করছেন অনেকেই।
জানা যায়, এ জেলায় বাণিজ্যিকভাবে ৭০টি, আবাসিক ৬ হাজার ৭শ’, সিএনজি স্টেশন ২টি, ক্যাপ্টিভ পাওয়ার ২টিতে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু দেখা যায়, ঠিক মতো গ্যাস না থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানান দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
লক্ষ্মীপুর শহরের হোটেল ব্যবসায়ীরা জানায়, গত একমাস থেকে গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। দিনের অধিকাংশ সময়ে লাইনে গ্যাস থাকে না। রাত ১০/১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত তা থাকে। কিন্তু এ সময়ে গ্যাসের চাপ কম থাকায় হোটেলের রান্না-বান্না করা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়ে লাকড়ি দিয়ে রান্না-বান্নার কাজ করা হচ্ছে। সাংবাদিক বিএম সাগর জানান, প্রয়োজনের সময় লাইনে গ্যাস থাকে না। কিন্তু গ্যাস বিল দিতে হচ্ছে। ঠিকমতো খাবার রান্না করতে পারছে না পরিবারের লোকজন। ফলে হোটেল থেকে খেতে হয় প্রায় সময়।
বিসিক শিল্পনগরীর বেকারির মালিকরা জানান, গত এক মাস ধরে গ্যাস সংকটের কারণে তাদের চাহিদা মতো কারখানায় উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এ কারখানায় ৪০ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে মালিক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আবাসিক গ্রাহক গৃহিনী স্বপ্না ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাসের শেষে গ্যাস বিল পরিশোধ করা হলেও অনেক সময় গ্যাস না পাওয়ার যন্ত্রণায় দিশেহারা হতে হয়। এই সমস্যা কবে দূর হবে আল্লাহপাক ভালো জানেন। কবির বাড়ীর দরজায় গ্যাস পাম্পে গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৫ শতাধিক সিএনজি অটোরিকশার দীর্ঘ লাইন। কয়েকজন সিএনজি অটোরিকশা চালক জানান, গ্যাসের জন্য এসে ফিলিং স্টেশনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া গ্যাস লাইনে প্রেসার না থাকায় অর্ধেক গ্যাস নিয়ে স্টেশন ছাড়তে হয়। এতে ভাড়া গাড়ির মালিকদের গাড়ি জমা দেয়ার পরে তাদের আর কিছুই থাকে না।
এ ব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড লক্ষ্মীপুর শাখার কর্মকর্তারা জানান, মূল সরবরাহ থেকে গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় গত কিছুদিন যাবত গ্রাহকরা যথাসময়ে গ্যাস পাচ্ছে না। প্রয়োজন মতো গ্যাস উত্তোলন করা হলে এ সমস্যা থাকবে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। তবে কখন এ সমস্যা দূর হবে সঠিক বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
এদিকে, গ্যাস সংকটের কারনে উৎপাদন কমেছে শিল্প-কারখানায়; দিনের বেশিীরভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে ফিলিং স্টেশন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, নোয়াখালীর সুন্দরপুর গ্যাস ক্ষেত্রটি বন্ধ থাকায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে গ্যাস সংকট সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেবে কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
0Share