নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে রাতের আঁধারে ছয় শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো: হোসাইন ওরফে জসিম নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার দিনগত গভীর রাতে সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের দূর্গাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। চাকুরিচ্যুতির সিদ্ধান্তে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীদের তুলে নেয়া হয়েছে বলে ধারণা করছে মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটি।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলো ছাত্র মো. রাসেল (১২), আব্দুল্যাহ (১০), জোবায়ের (১০), মো. মুরাদ (১০), রবিন (১০) ও মনির হোসেনকে (১০)। এরা সবাই একই গ্রামের রহমানিয়া তালিমুল কুরআন কাওমী মাদরাসার হেফজ-খানার ছাত্র। অভিযুক্ত শিক্ষকের বাড়ি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকায়। তিনি লক্ষ্মীপুরের দিঘলী ইউনিয়নের শান্তিরহাট এলাকায় শশুর বাড়িতে থাকতেন।
এ দিকে সোমবার সকালে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জসিম উদ্দিন নামে এক সিএনজি অটোরিক্সা চালককে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী মাদরাসা শিক্ষক মনিরুল ইসলাম জানান, ওই মাদরাসায় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ শিক্ষার্থী মাদরাসা হোস্টেলে(আবাসিক) থেকে পড়ালেখা করছিল। রোববার রাত দুইটার দিকে হোস্টেলে থাকা আট শিক্ষার্থীকে একটি সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে পালিয়ে যায় মাদ্রাসা শিক্ষক হোসাইন। ঘটনার সময় গেইটের শব্দ শুনে ঘুম থেকে জেগে উঠে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন শিক্ষক মনিরুল। এ সময় তিনি চিৎকার করলে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। এর আগেই শিক্ষক হোসাইন ৮ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে (আজ) সোমবার সকালে দুই শিক্ষার্থীকে রাস্তার পাশে পেয়েছেন দাবি করে একই গ্রামের জসিম উদ্দিন নামে এক সিএনজি অটোরিক্সা চালক মাদরাসায় নিয়ে আসলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাস্টার নুরনবী জানান, শিক্ষার্থীদের ভালো পাঠদান করতে না পারায় গত শুক্রবার ম্যানেজিং কমিটির এক সভায় শিক্ষক হোসাইনকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অন্য কোথাও চাকুরি খুঁজে নিতে তাকে এক সপ্তাহ সময়ও দেয়া হয়। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীদের নিয়ে হোসাইন পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন জানান, কুমিল্লার কোন এলাকায় ওই শিক্ষার্থীদের লুকিয়ে রাখা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মো ঃ আরজুন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জসিম উদ্দিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। তবে শিশু শিক্ষার্থীদের উদ্ধার ও শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি।
0Share