নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর জেলা আমলি আদালত-২ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শামছুর রহমানকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। ওই কর্মকর্তার প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মজুপুর মহল্লার ফাহমিদা ইয়াসমিনের দায়ের করা যৌতুকের মামলায়
জামিন নিতে গেলে লক্ষ্মীপুর জেলা আমলি আদালত-২ এর জ্যেষ্ঠ বিচারক ইব্রাহীম মিয়া মঙ্গলবার তাঁকে জেলহাজতে পাঠান। শামসুরের দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানার পর তার স্ত্রী ফাহমিদা গত ১৪ জুলাই এ মামলা করেন।
শামছুরের প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মজুপুর মহল্লার ফাহমিদা ইয়াসমিন বলেন, একই এলাকার বাসিন্দা শামছুরের সঙ্গে ২০০৬ সালে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের পাঁচ বছরের একটি ছেলেও আছে। বিয়ের পরপরই বিভিন্ন নারীর সঙ্গে শামছুরের অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি তিনি জানতে পারেন। এ বিষয়টি তিনি তাঁর শাশুড়িসহ পরিবারের অনেককেই জানিয়েছিলেন। তবে সন্তানের কথা ভেবে কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।
ফাহমিদা আরও জানান, ২০১২ সালে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে যোগদান করার পর তাঁকে সেখানে নেননি শামছুর। গত দুই বছর থেকে তিনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগও বন্ধ করে দেন। সর্বশেষ এ বছরের জানুয়ারি মাসে শামছুর তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করেন। যৌতুকের টাকা না দিলে তাঁর (ফাহমিদা) সঙ্গে সংসার করবেন না বলেও হুমকি দেন।
অবশেষে প্রথম স্ত্রী থাকার পরও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে গত ৩১ মে শামছুর ঘোড়াঘাটের এক নারীকে গোপনে বিয়ে করেন। কিন্তু এক দিন পরই তিনি বিয়ে অস্বীকার করে ওই নারীসহ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তাঁকে (শামছুর) অপহরণ করে বিয়েতে বাধ্য করার অভিযোগে রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।
মামলার পর ওই নারী শামছুরের বিচার দাবি করে গত ২ জুলাই স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্থানীয় সাংসদ, স্বাস্থ্যসচিব, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে গত ১০ জুন দিনাজপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাও করেন।
ফাহমিদার বাবা এলজিইডির সাবেক প্রকৌশলী জানান, তাঁর মেয়ের সংসারকে টিকিয়ে রাখতে ইতিপূর্বেও পারিবারিকভাবে দুইবার বৈঠক হয়েছে। তবে সন্তানের কথা ভেবে ফাহমিদা কোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. হাসান জানান, মামলার পর বিচারক শামছুর রহমানের বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। মঙ্গলবার তিনি আদালতে জামিন চাইতে গেলে বিচারক তাঁকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিচারকের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করে ফাহমিদার বাবা জানান, শামছুর রহমান তাঁর মেয়ের জীবন নষ্ট করেছেন। তিনি শামছুরের উপযুক্ত শাস্তি ও বিচার আশা করেন।
0Share