সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিন খাগুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাওলানা আব্দুজ্জাহেরের উপর স্কুল অফিস কক্ষে গত মঙ্গলবার সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। এসময় শিক্ষকের ব্যবহৃত হিরো ইসপ্লেন্ডার প্লাস (মোটরসাইকেল) পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির লক্ষ্মীপর সদর থানা শাখার সভাপতি শামছুদ্দিন বাবুল, সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সেক্রেটারী আলা উদ্দিন আলো, শিক্ষক সমিতির দিঘলী শাখার সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন প্রধান শিক্ষকের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় একাধিক সুত্রে জানা গেছে, দক্ষিন খাগুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিগত দিনে পিয়ন নিয়োগ, প্যারা শিক্ষক নিয়োগ, বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান, স্কুল গৃহে গরু ব্যবসায়ীদের গরু রাখতে না দেওয়ায় ও স্কুলের উপবৃত্তির ছবি তোলার কাজ না দেওয়ায় স্থানীয় একটি চক্র প্রধান শিক্ষকের উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় তাঁরা। প্রধান শিক্ষক এ বিষয় গুলো সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে জানিয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ২৪/০৪/২০১৬ইং তারিখ স্থানীয় এক স্টুডিওর মালিককে উপবৃত্তি সংক্লান্ত শিক্ষার্থীদের ছবি তোলার কাজ না দেওয়ায় ২৬/০৪/২০১৬ইং তারিখে মিথ্যা একটি অভিযোগ ও কল্প কাহিনী সাজিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে পরিকল্পিতভাবে স্কুলের সামনে মিছিল করে ও স্কুলের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা করে। মূলত প্রধান শিক্ষককে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিহিংসা বসত এ মিথ্যা ঘটনা প্রচার করে তাকে মারধর ও তার মোটরসাইকেলটি পুড়িয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে ওই শিক্ষক চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন।
উল্লেখ্য মাওলানা আব্দুজ্জাহের একটি দাখিল মাদ্রাসার সাবেক সুপার ও জুমা মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি শিক্ষক সমিতির দিঘলী ইউনিয়নের সভাপতি ও রমাপুর জামে মসজিদের সেক্রেটারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার স্ত্রীও রমাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষিকা।
এ ব্যাপারে দক্ষিন খাগুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাষ্টার মো. মোতাহের হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুর্বে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা, তাঁকে মারধর ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া কোন ভালো মানুষের কাজ নয়।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ওমর ফারুক জানান, খাগুড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুজ্জাহেরকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাকে মারধর ও গাড়ি পোড়ানোর বিষয়টি শুনে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসমাইল হোসেন প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গনেশ চন্দ্র শীল প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার ঘটনা ও মোটরসাইকেল পুড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পুড়ে যাওয়া গাড়ির ইঞ্জিনটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
0Share