তাবারক হোসেন আজাদ: বৃষ্টি এলে চাল ছেদ করে অঝোরে পানি পড়ে। শিক্ষকদের অফিস কক্ষে নেই আসবাবপত্র । ভাঙ্গা বেঞ্চ, এর মাঝেই ঠাসাঠাসি করে প্রায় তিন’শ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান। ডিপ টিউবওয়েল ও টয়লেট না থাকায় অন্য বাড়ীতে গিয়ে সৌচকর্ম সারতে হয়। প্রতি বছর শতভাগ পাশের মত প্রশংসনীয় ফলাফল অর্জনের গৌরব থাকলেও প্রতিষ্ঠঅনের যাবতীয় সমস্য সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন করে চার দশক ধরে কোন প্রতিকার মিলছে না। এ অবস্থায় সংশয় ও আতংক নিয়ে জরাজীর্ণপুরাতন ভাঙ্গাচোরা টিনের ঘরে চলছে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পীর ফজলুল্লা ইসলামী মিশন দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষা কার্যক্রম।
সরজমিনে গেলে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা জানান, রায়পুরের প্রখ্যাত পীর ফজলুল্লাহ ১৯৭৯ সালের ১৯ জানুয়ারি পৌরসভার কেরোয়া গ্রামের রায়পুর-কাফিলাতলী সড়কের তপাদার বাজার এলাকায় ১ একর ২৪ শতাংশ জমির ওপর এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। ১৯৮৭ সালে ১ জুন প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়। সেই থেকে জরাজীর্ণ পুরাতন টিনের ঘর ও ভাঙ্গাচোরা বেঞ্চে ঠাসাঠাসি করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। প্রতিবছরই এবতেদায়ি, জেডেসি ও দাখিলের ফলাফলে শতভাগ পাশের গৌরব অর্জন করে আসছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ গনিত, ইংরেজী, শরীরচর্চা শিক্ষক ও অফিস সহকারিসহ ৬টি পদ শূন্য রয়েছে। নেই লাইব্রেরী। শিক্ষকদের বসায় চেয়ার ও অন্যান্য আসবাবপত্র নেই। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে এসব সমস্যার কারনে বার বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলেও কেউ এ মাদ্রাসায় আসতে চায় না।
অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী লামিয়া আক্তার ও সুরভী বলেন, টয়লেট না থাকায় আমরা মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি বাড়ীতে গিয়ে সৌচকর্ম সারতে হয়। পাশের চা দোকান থেকে পানি এনে তা পান করতে হচ্ছে। অল্প বৃস্টিতেই ক্লাসরুম ভিজে যায়। একটু জোরে বাতাস এলে আতংকে সবাই জড়ো হয়ে থাকি। স্যাররাও আমাদের সাথে ভিজে একাকার হয়।
অভিভাবক মোঃ রাসু বলেন, মাদ্রাসার জরাজীর্ণ কাচা ভবন এবং অসংখ্য সমস্যার মাঝেও প্রতি বছর ভাল ফলাফল করে থাকে। কোন সরকার, এমপি, মেয়র এ প্রতিষ্ঠানটির সহযোগীতায় এগিয়ে আসেনি। আমরা আশা করব এ সরকার এ প্রতিষ্ঠানটির দিকে সুনজর দিবেন।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা সামছুল আলম বলেন, মাদ্রাসার আসবাবপত্র সংকটসহ প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামো উন্নত করা গেলে নিঃসন্দেহে এটি উপজেলার সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। সংশ্লিষ্টদের কাছে একাধিকবার লিখিতভাবে সহযোগীতা চেয়েও আজও কিছুই পাইনি।
মাদ্রাসার সভাপতি জামসেদ কবির বাক্কী বিল্লাহ্ বলেন, প্রতিষ্টানটি দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত করুন অবস্থায় রয়েছে। কয়েকদিন আগে জেলা পরিষদ প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সহযোগীতা চাওয়া হলেও অদ্যাবধি কোন সাড়া পাইনি।
0Share