নিজস্ব প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫০ বছরপূর্তিতে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ৫০ টি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা সভা ও ঈদ পূণঃমিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুক্রবার ( ৮ জুলাই) বিকেলে তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মিলনাতনের এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাক্তন ছাত্র ও ভেটেরিনারী চিকিৎসক তোফায়েল আহমেদ। প্রাক্তনছাত্র এবং তোরাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ রতনের সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে প্রাক্তনছাত্র ও শিক্ষকগণের নানাবিধ স্মৃতিচারণ ও পরামর্শ মূলক বক্তব্যে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে বিদ্যালয় মিলনায়তন।
স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে সদ্যবিদায়ী প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবদিন বলেন, আমার জীবনের বিশাল অংশের প্রতিফলন এ হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী। প্রাক্তন শিক্ষক হাজিরহাট উপকূল কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মোতালেব বলেন, এ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক হিসাবে নিজকে খুবই ভালো লাগছে ।অবসর প্রাপ্ত কৃষিকর্মকর্তা ফয়েজ আহমেদ বলেন, সারা জীবন কৃষি বিভাগে চাকুরী করার পরও মানুষ আমাকে মাস্টার বলে কারণ আমি অল্প কিছু দিন এ বিদ্যালয়ে চাকুরী করেছি। এ বিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত মাস্টার শব্দটি ভালো লাগে।
প্রাক্তনছাত্র বর্তমানে চাঁদপুর সরকারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক আলাউদ্দিন বলেন, আমি এ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ রতন বলেন, আমি এ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসাবে সবসময় গর্বিত। বিআরডিবি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, যে কোন ভাবেই হোক আমি আমার বিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধরে রাখার পক্ষে। পুলিশ কর্মকর্তা মহি উদ্দিন ফারুক বলেন, যত দূরেই থাকি তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় কে স্মরণ করি, এটা আমার প্রেরণা।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রবাসী আবদুজ্জাহের ভুইয়া, ভূমি কর্মকর্তা আবদুর রশিদ, ভূমি কর্মকর্তা মোছলেহ উদ্দিন, প্রযুক্তি কর্মী নুরুল হুদা মার্টিনী, সরকারী কর্মকর্তা জিয়া উদ্দিন ফারুক, শিক্ষিকা নাজনীন সুলতানা স্বপ্না, রাজনৈতিক নেতা মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পী, শিক্ষক ও সাংবাদিক সানা উল্লাহ সানু, বীমা কর্মকর্তা আবসার উদ্দিন রাসেল, ডাঃ সোহরাব, বশির আহমেদ, যুবনেতা ওমর ফারুক সাগর, ছাত্রনেতা জাহাঙ্গীর আলম বিপ্লব ও রাকিবুল হাসান বিপ্লব, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মিজান, সরকারী চাকুরীজীবি আজহারুল ইসলাম, শাহ আসরাফ আহমেদ রাজেন, আনোয়ার হোসেন, জুনাইদ আল হাবিব সহ আরো অনেকে।বক্তারা বিভিন্ন রকমের পরামর্শ মূলক বক্তব্য রাখেন।
জানা যায়, তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়টি ২০১৬ সালে কমলনগর উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের গৌরবসহ এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামাল উদ্দিন আহমেদ উপেজেলার শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষকের মর্যাদা লাভ করে। ১৯৬৮ সালে স্থানীয় জমিদার মরহুম তোরাবআলী মিয়া এবং মরহুম মন্তাজ মিয়াদের দান করা ৮ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি বর্তমানে শুধু উপজেলাই নয় পুরো জেলাতে একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃত। মানসম্মত শিক্ষা, খেলাধূলা, সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের এ বিদ্যালয়ের ব্যাপক সুনাম রয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে আগামি ২০১৭ সালে ৫০ বছর পূর্তিতে সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালনের জন্য প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের উদ্যোগে তোরাবগঞ্জ হাইস্কুল স্টুডেন্ট ফোরাম নামের একটি সংগঠন গঠন করা হয়েছে।সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব পালন ছাড়া ও অনুষ্ঠানে বক্তাদের পরার্মশ অনুযায়ী প্রতি বছর ঈদের পরের দিন এ রকম মিলনমেলার আয়োজনের সিদান্ত হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় ছয় শতাধিক প্রাক্তনশিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
0Share