মোঃ আলী হোসেন, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুতের লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আধা ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করলে আড়াই ঘন্টা লোডশেডিং করা যেন লক্ষ্মীপুরে নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকার ৯টি ইউনিয়ন এবং রামগতি-কমলনগর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং করা হচ্ছে। দিনের অধিকাংশ সময় লোডশেডিং করা হলেও রাতেও একই অবস্থা। স্থানীয় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ কারো যেন এ নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করলে গত দুইবছর যাবত একই উত্তর দিয়ে বলা হচ্ছে, চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক গ্রীডের ৩৩ হাজার কেবি সঞ্চালন লাইনে উন্নয়ন কাজ চলছে। তাই বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করা হচ্ছে। আবার কখনও বলা হচ্ছে, লক্ষ্মীপুর জেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২৩ মেগাওয়াট পর্যন্ত। বিশাল ঘাটতি থাকায় লোড ম্যানেজমেন্ট করা হচ্ছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানা শহরের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক শাহ আলম, জসীম উদ্দিন, হেদায়েত উল্যাহ, শাহজাহানসহ অনেকেই বলেন, ভোর বেলায় বিদ্যুৎ গেলে বেলা ১১টায় আসে। এ সময় বাসা-বাড়িতে পানির জন্য হাহাকার পড়ে যায়। এতে গৃহস্থালি কাজে গৃহিনীদের মারাত্মকভাবে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ না থাকায় শিশু শিক্ষার্থীদের পড়ালেখাও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ৪বার লোডশেডিং করা হয়েছে। সারারাত চন্দ্রগঞ্জ এলাকার মানুষ তীব্র গরমে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন।
একইভাবে কমলনগর উপজেলার বিদ্যুৎ গ্রাহক সাংবাদিক সানাউল্যাহ সানু জানান, লক্ষ্মীপুরে সবচেয়ে অবহেলিত উপজেলা কমলনগর। এখানে দিন-রাত ২৪ ঘন্টায় ৫ ঘন্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যায়না।
এ দিকে জেলার বিদ্যুৎ নির্ভর ওয়ার্কসপ, বরফকল, মটর গ্যারেজসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকরা জানান, বিদ্যুতের অভাবে তাদের ব্যবসা লাটে উঠেছে। দৈনন্দিন সংসার খরচ চালাতেই তারা এখন হিমশিম খাচ্ছে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শাহজাহান কামালের বক্তব্য জানার জন্য তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লক্ষ্মীপুর জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী ব্যবস্থাপক (এজিএম-কম) সিরাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চৌমুহনী-লক্ষ্মীপুর মূল সঞ্চালন লাইনে কাজ চলছে। তাই দীর্ঘ লোডশেডিং হচ্ছে। এ ছাড়াও তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২৩ মেগাওয়াট।
0Share