কাজল কায়েস, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:: জনসংখ্যায় গড়মিল থাকায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ হাজার ৭৭১ জন হতদরিদ্র মানুষকে খেসারত দিতে হচ্ছে। এতে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া থেকে তাদের বঞ্চিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এনিয়ে চরম ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়ছে এসব অভাবী লোকজন। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের ভুলের জন্য খেসারত দিতে হবে।
এদিকে, রামগঞ্জে হতদরিদ্র উপকারভোগীর কার্ড সংখ্যার পুনঃনির্ধারণ করতে সম্প্রতি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নয়ন জ্যোতি চাকমা চিঠি পাঠিয়েছেন। খাদ্য অধিদপ্তরের সরবরাহ, বন্টন ও বিপনন বিভাগের পরিচালক, চট্রগ্রাম বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও জেলা প্রশাসকসহ (ডিসি) সংশ্লিষ্টদের এ চিঠি পাঠানো হয়।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলায় ৫৬ হাজার ৬৯৮ জন জনসংখ্যার ভিত্তিতে ১ হাজার ৪২৯ টি হতদরিদ্রের কার্ড বরাদ্ধ দেওয়া হয়। কিন্তু রামগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী (আদমশুমারী ২০১১ অনুসারে ) জনসংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৬ জন। এ অনুপাতে মোট ৭ হাজার ২০০ কার্ড বরাদ্ধ হওয়ার কথা ছিল। অথচ বরাদ্ধ হয়েছে ১ হাজার ৪২৯ টি। বঞ্চিত হচ্ছে ৫ হাজার ৭৭১ জন।
উপজেলার হাজীপুর গ্রামের রিকশা চালক আবুল কালাম বলেন, কম দামে চাল কেনার কার্ডের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে কয়েকবার গিয়েছে। তারা বলছে, বরাদ্ধ কম আসায় কার্ড নেই। আর আসার সম্ভাবনাও অনিশ্চিত।
রামগঞ্জের ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিক বলেন, প্রশাসনের ভুলের কারনে হতদরিদ্র মানুষকে খেসারত দিতে হবে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আমি দাবি জানাচ্ছি। এতে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষ যেন সুফল পাবেন।
রামগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা সরকার হুমায়ুন কবির বলেন, রামগঞ্জে জনসংখ্যা ২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮৬ জন। ঢাকা থেকে সরবরাহ করা তথ্যতে সেখানে গড়মিল হতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে জনসংখ্যার তথ্য সঠিক রয়েছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নয়ন জ্যোতি চাকমা বলেন, জনসংখ্যা অনুপাতে পুনরায় কার্ড বরাদ্ধ দেওয়ার জন্য উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পুনরায় বরাদ্ধ পেলে এ সংকট লাঘব হবে।
জানতে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর আওতায় লক্ষ্মীপুরে ৪২ হাজার ৯৮ জন রয়েছে। জেলার ৫৮ টি ইউনিয়নে ৯৫ জন ডিলারের মাধ্যমে হতদরিদ্র কার্ডধারীদের বছরের ৫ মাস যথাক্রমে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর, মার্চ ও এপ্রিলে ৩০ কেজি করে ১০ টাকা নির্ধারিত মূল্যে চাল পাবে। শুক্র, শনি ও মঙ্গলবার এ চাল বিক্রি করা হবে। হতদরিদ্র ছাড়াও প্রতিবন্ধি, বিধবা ও বিবাহ বিচ্ছেদের শিকার নারীরা এ সুবিধাভোগী হবেন।
0Share