নিজস্ব প্রতিনিধি:: লক্ষ্মীপুরে ফারহানা আক্তার নামে এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে লক্ষ্মীপুর শহরের শাখারীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আহত ফারহানা লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী পরীক্ষার্থী। সে পাবনা জেলার ভাঙ্গুরা উপজেলার আদাবাড়িয়া গ্রামের আবদুর রহমান খাঁনের মেয়ে।
ফারহানার দাবি, লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুনরে স্ত্রী সে। প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। এখন তা অস্বীকার করে ওই চিকিৎসক তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে।
স্থানীয়রা জানায়, কলেজছাত্রী ফারহানা লক্ষ্মীপুর পৌর শাখারীপাড়া এলাকায় সবিতা রাণী নামে এক ভিজিটরের বাসায় থেকে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রী পরীক্ষা দিচ্ছিল।
পরীক্ষা শেষে ফারহানা বিকালে পাবনার উদ্দেশ্যে সবিতা রানীর বাসা থেকে বের হয়। অপেক্ষা করেও বাস কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে ফের বাসায় ফেরার পথে ওই কলেজছাত্রী দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন। এ সময় তার চিৎকারে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে লক্ষ্মীপুর সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফারহানা সাংবাদিকদের জানায়, সে আগে লক্ষ্মীপুরে সেইভ দ্য চিলড্রেন- এর মা-মনি প্রকল্পের কর্মী হিসেবে কাজ করত। ওই সময় লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই সম্পর্কের সূত্র ধরে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে সিলেট এলাকার সুরমা ভ্যালী রেস্ট হাউজে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
এই কলেজছাত্রী জানান, বিয়ের কিছুদিন পরই ডা. আশফাকুর তাকে স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে নিষেধ করে। এ নিয়ে আশফাকুরের সঙ্গে ফারহানার দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
ফারহানা আরও জানায়, ইতোমধ্যে মোবাইল ফোনে ডা. আশফাকুর তাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং লক্ষ্মীপুর আসতে নিষেধ করে।
তার অভিযোগ, পরীক্ষা দিতে লক্ষ্মীপুর আসায় ডা. আশফাকুর তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা চালায়।
অভিযোগের বিষয়ে লক্ষ্মীপুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডা. আশফাকুর রহমান মামুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
আশফাকুর রহমান বলেন, এর আগেও ফারহানা লক্ষ্মীপুর সেইভ দ্য চিলড্রেনে কাজ করার সময় মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেছিল। তার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ফাঁসানোর জন্য এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে সে।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন জানান, আহত কলেজছাত্রী ফারহানাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার পেটে ও বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।
খবর পেয়ে, লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. শাহনেওয়াজ, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ও সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুদল্লা আল মামুন আহত কলেজছাত্রীর চিকিৎসার খবর নিতে হাসপাতালে যান।
এসময় তারা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
0Share