কাজল কায়েস: নতুন বছরের দু সপ্তাহ পার হতে চললেও লক্ষ্মীপুরে সব বই পায়নি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। চাহিদা অনুযায়ী এখনো জেলায় ৮ লাখ ১৮ হাজার ১২০টি বইয়ের সঙ্কট রয়েছে। শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে দুই-একটি বই তুলে দিলেও পুরোদমে পাঠদান কার্যত্রম শুরু করতে পারছে না শিশুরা।এতে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকেই বাড়ি ও বিদ্যালয়ে বইয়ের জন্য কান্না করছে। অন্যরা সব বই না পাওয়ায় মন খারাপ করে বিদ্যালয়ে আসছে। এ অবস্থায় শিক্ষা কার্যত্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলার ১১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭০ শিক্ষার্থীর জন্য ১১ লাখ ৭০ হাজার ৭২০টি বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে বরাদ্ধ এসেছে মাত্র ৩ লাখ ৫২ হাজার ৬শ বই। জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতি উপজেলায় বরাদ্ধ পাওয়া বই বিতরণ করা হয়েছে। এখনো সঙ্কট রয়েছে ৮ লাখ ১৮ হাজার ১২০টি বইয়ের।
বরাদ্দ পেলে যথাযথভাবে বইগুলো সরবরাহ করা হবে।রায়পুরের দক্ষিণ-পূর্ব কেরোয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার ও চতুর্থ শ্রেণির সায়মুন আক্তার জানায়, বই না থাকায় আগের মতো ক্লাস হচ্ছে না। নতুন বই না পাওয়ায় তাদের মন খারাপ। বিদ্যালয়ে যেতে ইচ্ছে করে না।রায়পুরের চরপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সমীর চন্দ্র কর্মকার বলেন, নতুন বইয়ের জন্য ছাত্রছাত্রীরা কান্নাকাটি করছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে প্রতিদিন জবাবদীহি করতে হচ্ছে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা একটি করে এবং তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ২টি করে বই পেয়েছে।কমলনগরের মধ্যচর জাঙ্গালিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল হায়দার জুলহাস জানান, প্রতি ক্লাসে ১ থেকে ৩টি করে বই দেয়া হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিশুরা বই পায়নি।কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, গত বছর ১ জানুয়ারি বই উৎসবে তারা সব বিষয়ের বই হাতে পেয়েছে। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষের সবগুলো বই এখনো পায়নি।সদরের উত্তর মজুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাছিনা আক্তার বলেন, আমরা যে বিষয়ের বই পেয়েছি, এখন শুধু সে বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী বই সরবরাহ করা হলে সব শিক্ষার্থীর মাঝে তা বিতরণ করা হবে।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সদর উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আবেদ জানান, বরাদ্ধ কম পাওয়ায় বিদ্যালয়গুলোতে ১-২টা করে বই ভাগ করে ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হয়েছে। বই উৎসবের মাধ্যমে বছরের প্রথম দিন থেকেই পাঠদান কার্যত্রম চলছে।এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ বলেন, চাহিদা অনুযায়ী বই পাওয়া যায়নি। এতে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে। বই আসলে শিগগিরই সঙ্কট কেটে যাবে।
0Share