সানা উল্লাহ সানু: ফেসবুকের কল্যাণে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর সীমান্ত এলাকা নোয়াখালীর আন্ডার চরে স্থাপিত হয়েছে “মাইজচরা জামে মসজিদ”।শুক্রবার (২০ জানুয়ারী) জুমার নামাজ আদায় করার মধ্য দিয়ে মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন, মসজিদটি নির্মাণের প্রধান সহায়তাকারী রামগতি-কমলনগর অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট ফোরামের সাধারণ ষম্পাদক মোঃ মাসুদ সুমন, মসজিদ কমিটির সভাপতি ওয়াদুদ মাঝি ও সেক্রেটারি মোঃ মিরাজ হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরগণ।
এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মসজিদটি নির্মাণের ইতিহাস জানাতে গিয়ে মাসুদ সুমন বলেন, ২০১৪ সালে এক আত্মীয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে জানাযা পড়তে আসি নোয়াখালী সদরের আন্ডার চর মাইজচরা এলাকায়। এখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাগরিবের নামাজের সময় নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের সন্ধান করি।তখন এলাকার লোকজন নামাজের জন্যে এ এলাকায় একটি মাচাং দেখিয়ে দেয় । আমি ওই মাচাংয়ে নামাজ আদায় করি কিন্তু বিষয়টি আমার কাছে বিস্ময়কর লাগে। নামাজ শেষে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করলে তারা জানান, এলাকার জনগণের আর্থিক অবস্থা ভালো না কিন্তু তারা ধার্মিক। এলাকায় মসজিদ নির্মাণের সার্মথ্য তাদের নেই। এলাকা থেকে ৭-৮ কিঃ মিঃ দূরে একটি মসজিদ আছে।আমার কাছে বিষয়টি আরো বিস্ময়কর মনে হয়।
আমি আবেগে আপ্লুত হয়ে যাই। সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। এরপর নিজের ফেসবুক একাউন্টে মাচাংয়ের ছবিসহ এ এলাকায় একটি মসজিদ স্থাপনের জন্য সহায়তা চেয়ে একটি স্ট্যাটাস দিই। এরপর অসংখ্য সাড়া। সাথে সাথে দেশ বিদেশের অসংখ্য বন্ধু আমার স্ট্যাটাসে সাড়া দেয় । তারা মসজিদের জন্য বিকাশ ও ডাচবাংলা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে দান করে মসজিদ নির্মাণে টাকা।৮ শতক জমিদান করেন স্থানীয় নুর মোহাম্মদ তারপর বাস্তবতা হচ্ছে আজকের এ মসজিদ।
এ সময় উপস্থিতির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনলাইন বিশেষ করে ফেসবুক ব্যবহার করে মসজিদটি নির্মাণের মা্ধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু বিনোদন নয়। এ মাধ্যমে যে ভাবে মানব কল্যাণে অবদান রাখা যায় তার উদহারণ হচ্ছে এ মসজিদটি। তিনি জানান এ অবহেলিত জনপদ আন্ডার চরে মসজিদ ছিল না আজ মসজিদ আছে।এর পিছনে অবদান ইন্টারনেট এবং ফেসবুকের। ফেসবুক ও ইন্টারনেট শুধু খারাপ দিক নয় এটির সাহায্যেও যে সামাজিক কাজ করা যায় তার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত আমরা রেখে গেলাম।
এদিকে ফেসবুক ব্যবহার করে মসজিদ নির্মাণের মতো মানবতাবাদি কাজে এগিয়ে আসার জন্য মাসদ সুমন কে স্বাগত জানান ফেসবুক ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন হৃদয়ে রামগতি, উপকূল বাংলাদেশ বন্ধুজন, রামগতি-কমলনগর অনলাইন এ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম, ভয়েস অব রামগতিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ।
এ সকল সামাজিক সংগঠনের প্রধানরা বলেন, তরুনরাই পারে একটি সমাজের জরাজীর্ণতা দূর করে সমাজকে বদলে দিতে। এ রকম অনন্য নজির সৃষ্টি করলেন রামগতির অনলাইন এ্যক্টিভিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ সুমন।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার গ্রামের যুবক মাসুদ সুমন ঔষক কোম্পানী ইনস্পেটা ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানীর এরিয়া ম্যানেজার হিসাবে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক রামগতির অনলাইন এ্যক্টিভিস্ট ফোরাম নামক অনলাইন ভিত্তিক একটি সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে নানাবিধ সামাজিক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছেন।
0Share