কাজল কায়েস: রায়পুর মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (ফিশ হ্যাচারি) বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত ও শুনানি হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযোগ পাওয়ায় হ্যাচারির সম্প্রসারণ সুপার ভাইজার মো. কামাল উদ্দিনকে বদলি করা হয় এং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্ততি চলছে। মঙ্গলবার মৎস্য অধিদফতরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (রিজার্ভ) এ কে এম লুৎফুর রহমান সিদ্দীক এ তদন্ত করেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ৪ ঘণ্টা এই হ্যাচারিতে কার্যক্রম চলে। এ সময় অভিযোগকারী, এলাকাবাসী ও সংবাদকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কর্মকর্তা কথা বলেন। এর আগেও ২২ জানুয়ারি একই কর্মকর্তা এ বিষয়ে তদন্ত করেছেন। এর আগে হ্যাচারির বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর
‘রায়পুর মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র: দুর্নীতিতে হাবুডুবু’ শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ নিয়ে প্রশাসনে ব্যাপক আলোচনা হয়। ২১ ডিসেম্বর মৎস্য বিভাগের কুমিল্লাস্থ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলীর তদন্তে এসে রেণু পোনা বিক্রির টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পায়। এতে হ্যাচারির সম্প্রসারণ সুপার ভাইজার মো. কামাল উদ্দিনকে বদলি করা হয়। চৌমুহনী মৎস্যবীজ উৎপাদন খামারে তাকে বদলি করে কর্তৃপক্ষ। কামালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্ততি চলছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি মৎস্য প্রজনন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে রশিদ ছাড়া রেণু পোনা বিক্রি, বেশি রেণু বিক্রি করে সরকারি হিসাবে কম দেখানো, দরপত্র ছাড়া নির্মাণ-সংস্কার কাজ করানো ও পুকুরে অতিরিক্ত চুন দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মা মাছ হত্যার ঘটনাও রয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলার দক্ষিণ কাঞ্চনপুর এলাকার খলিলুর রহমান সম্প্রতি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনিয়মের সুনির্দিষ্ট একাধিক তথ্য-প্রমাণসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী এবং ওই মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর মৎস্য অধিদফতরের মহা-পরিচালক এসব অনিয়মের বিষয়ে এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। মঙ্গলবার দুপুরে তদন্তকালে রায়পুর ফিশ হ্যাচারিতে মৎস্য অধিদফতরের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (রিজার্ভ) এ কে এম লুৎফুর রহমান সিদ্দীক বলেন, কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো তদন্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরে শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। রেণু পোনা বিক্রির রশিদে টাকার অংকের স্থানে গড়মিল থাকায় কামাল উদ্দিনকে বদলি করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রস্ততি চলছে।
0Share