নিজস্ব প্রতিনিধি: বিগত সময়ে এক সাথে দেশের ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তখন দুর্ভাগ্যবশত তালিকা থেকে বাদ পড়ে লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল দক্ষিণ আন্দারমানিক গ্রামের এ জামান প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। পরে ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা এবং লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ বিষয়ক যাচাই-বাচাই কমিটির সুপারিশক্রমে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস অবহেলিত গ্রামের একমাত্র বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন (স্মারক নং ডিপিইও/লক্ষ্মী/১৮৭৭/৪) দাখিল করেন। সে প্রতিবেদন দাখিলের পর দীর্ঘ ২ বছর অতিবাহিত হতে চললেও বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের গেজেট আজও প্রকাশিত হয়নি। ইতোমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে জানা যায়, বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের ঘোষণা প্রক্রিয়াধিন।
অন্যদিকে এলাকাবাসির প্রত্যাশা যেহেতু বিগত সময়ে প্রধানমন্ত্রীর এক ঘোষণায় দেশের ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ সাথে তাদের বিদ্যালয়টি বঞ্চিত হয়েছে এবার সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্মীপুরে আগমনে তাদের গ্রামের বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের প্রকিয়াধীন। তাই আন্দারমানিকবাসির প্রত্যাশা প্রধানমন্ত্রীই লক্ষ্মীপুরে তাদের বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে যাবেন। সে জন্য গ্রামবাসি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসনের সকল স্তর ও জেলা আওয়ামীলীগ এবং সকল অংগসংগঠনের সহযোগিতা চেয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ৫০ শতক নিজস্ব জমিতে ৭০ ফুট টিনসেডের ঘরে ৫ শ্রেনীর ১শ ৮০ জন শিশু শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরাঞ্চল দক্ষিণ আন্দারমানিকের এ জামান প্রাথমিক বিদ্যালয়। পাঠদানে নিয়মিত আছেন ৪ জন শিক্ষক। বিগত বছর গুলোতে প্রাথমিক সমাপনীতে পাশের হার শতভাগ। তবুও শিক্ষকদের বেতন নেই। কবে হবে বেতন তা ও কেউ জানে না। এরপরেও ছোট শিশুদের লেখাপড়া রেখে কোন শিক্ষকই যাচ্ছে না অন্যত্র।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেয়ারিগঞ্জ ইউনিয়নের আন্দারমানিক গ্রাম একটি প্রত্যন্ত চরাঞ্চল। যেখানে চলাচলের রাস্তা ও নেই। প্রশাসনের নিয়মিত পা পড়ে না যে গ্রামে। সন্ধ্যার পর নামে অন্ধকার। পুরো গ্রামের সকল অধিবাসিই কৃষিজীবি। তবুও কৃষিজীবি পরিবারের এ ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার প্রতি যেন প্রশাসনের নজর একটু কমই। প্রশাসনের নজর না পড়লেও গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক আক্তারুজ্জামান নিজের অজ্ঞতার কথা স্বীকার করে গ্রামের শিশুদের কে আলোর পথে আনার জন্য ১৯৯১ সালে নিজের ৫০ শতক জমি দান করেন বিদ্যালয়ের জন্য। তারপর স্থানীয়রা সেখানে গড়ে তোলেন, দক্ষিণ আন্দারমানিক এ জামান বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
২০১২ সাল থেকে বিদ্যালয়টি থেকে শতভাগ শিক্ষার্থী নিয়মিতভাবে পাশ করে আসছেন। সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বললেন, অবস্থানগত দিক থেকে বিদ্যালয় এলাকাটি অত্যন্ত অনুন্নত। অবহেলিত এ চরাঞ্চলের শিশু শিক্ষার জন্য এ বিদ্যালয়টি যত দ্রুত সম্ভব জাতীয়করণ করা জরুরী। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও আশা করেন বিদ্যালয়টি শীঘ্রই জাতীয়করণের তালিকায় আসবে।
0Share