রায়পুর প্রতিনিধি:: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্যা সড়কের সাড়ে ১৬‘শ মিটার সংস্কারের কাজের এক বছর পার না হতে বড় বড় গর্ত ও মাঝখানে ফাটল দেখা দেওয়ায় বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গ্রামবাসি, পথচারী, শিক্ষার্থীসহ ছোট ছোট যানবাহন চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করছে। জরুরী ভিত্তিতে সড়কটি পুনঃসংস্কার করার জন্য পৌরসভা মেয়রের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসী ও স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা।
গ্রামবাসি, স্থানীয় কাউন্সিলর ও পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রায়পুর-কাজীরদীঘির পাড় পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার এ গুরুত্বপূর্ন ও বেহাল সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গ্রামবাসি, পথচারী, একটি কলেজসহ ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চলাচলসহ ছোট বড় যানবাহন যাতায়াত করছে। জনগনের দূর্ভোগ লাঘবে গত ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পৌরসভার এলজিআইডি’র অধীনে টেন্ডারের মাধ্যমে দক্ষিন-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম ফিশহ্যাচারী মোড় থেকে (সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্যা সড়ক) শিবপুর গ্রামের ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা ব্যায়ে ১৬শ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজ পান বিএনপি নেতা ও ঠিকাদার কামাল ভূঁইয়া। অনিয়ম ও নিম্নমানের কংকর ব্যবহার করায় ওই সড়ক সংস্কারের কাজটি তিন মাসের মাথায় দশটি স্থানে ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে সচেতন গ্রামবাসী ও স্থানীয় কাউন্সিলর আইনুল কবির মনির ভূঁইয়া সড়কের কাজ ও ঠিকাদারের অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মেয়রের কাছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ও নির্বাহি প্রকৌশলি এটিএম সাদেক হোসেন ও কাউন্সিলর বাহার হোসেনকে দিয়ে ওই সড়কের সংস্কারের কাজের উপর তদন্তটিম গঠন করেন। তদন্তটিমও ঠিকাদার গাফলতি ও সংস্কার কাজের অনিয়মের প্রমান পান। কিন্ত অনিয়ম থাকা ঠিকাদার কামাল ভূঁইয়া পৌরসভার কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে আতাত করে কাজের ৪০% টাকা তুলে নেন। গত ৪ মাস আগে ওই সড়কটির অনিয়ম তদন্ত করতে এসে ঠিকাদারের কংকর ব্যবহার করে সংস্কার কাজের প্রমান পান সংশ্লিষ্ট বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের অডিট কমিটি।
যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত ঠিকাদার কামাল ভূঁইয়া বলেন, ১৭ লাখ টাকা ব্যায়ে সড়কটির সংস্কার কাজে কোন অনিয়ম হয়নি এবং এখন যদি খারাপ হয় তাও বৃষ্টির কারনে নষ্ট হয়েছে। আমি ঢাকা থেকে ফিরে এসে সড়কটি পূনঃ সংস্কার করে দেব।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এটিএম সাদেক হোসেন বলেন, সড়কের সংস্কার কাজের এক বছরের মধ্যে নষ্ট হলে তা পূনরায় করে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। সড়কটি সংস্কার কাজের চল্লিশ ভাগ টাকা ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে। মাসিক সভায় আমি এবং গত চার মাস আগে অডিট টিম সড়কটির সংস্কার কাজে অনিয়মের সত্যাতা পেয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। সড়কটি পূনঃসংস্কার করে দেওয়ার জন্য ২বার ওই ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্ত অদ্যবধি সে চিঠির জবাব দিচ্ছে না ও কাজও করছে না।
পৌরসভার মেয়র হাজী ইসমাইল খোকন বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী ও অডিট টিমের আপত্তি থাকার কারনে ওই ঠিকাদারকে সড়কটি সংস্কার করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে না করলে পৌরসভা থেকে করে দেওয়া হবে।
0Share