নিজস্ব প্রতিবেদক, লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোরঃ লক্ষ্মীপুরের প্রতিটি রুটে গণপরিবহনগুলোতে শিক্ষার্থীদের সাথে বাস ভাড়া নিয়ে বাক-বিতন্ডা যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।অনেক সময় বাসভাড়া নিয়ে বিবাদ শুধু কথা কাটাকাটির মধ্যে না থেকে তা ভাংচুর, রাস্তা অবরোধ, মারামারির পর্যায়ে গড়ায়। জানা যায়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মূল ভাড়ার অর্ধেক নেওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র ভাড়া বা হাফ ভাড়া দিতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়তে হচ্ছে স্কুল কলেজের অনেক শিক্ষার্থীকে।
মোঃ ইলিয়াছ তপু নামের এক শিক্ষ্মর্থী লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, হাফ ভাড়ার বিষয়টি অন্যান্য রুটের পরিবহনগুলো মোটামুটি মানলেও চৌমুহনী থেকে রায়পুরগামি বাসের হেলপাররা তা মানতে চাচ্ছে না। তিনি তার অভিজ্ঞতার একটি বিষয় তুলে ধরে জানান, ৬ জুন মঙ্গলবার চৌমুহনী থেকে রায়পুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা একটি আধুনিক (বাস নং নোয়াখালী ব ০৫——–) বাসে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের কয়েকজন ছাত্রী হাফ ভাড়া দিতে গিয়ে হেলপারের সাথে বাকতিন্ডায় জড়ায়। হেলপার ওই ছাত্রীদের কাছ থেকে জোর পূর্বক ফুল ভাড়া আদায় করে নেয়।
নাজমা নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুক এসএমএসের মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরটোয়েন্টিফোর কে জানায়, কলেজ আসা যাওয়ার প্রায় সময় বাস গুলোতে ভাড়া নিয়ে বিড়ম্ভনায় পড়তে হয়।মানসম্মান আর চালক সহকারীদের অশোভন আচরনের ভয়ে বাধ্য হন নির্ধারিত ফুল ভাড়া দিতে।মাঝে মধ্যে চালক সহকারীরা অর্ধেক ভাড়া বিতর্কে অনেক শিক্ষার্থীকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে জানান ওই ছাত্রী।
গণমাধ্যম সুত্রে জানা যায় ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সরকারি মালিকানাধীন বিআরটিসিসহ অন্যান্য বাসগুলোতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নেয়ার নির্দেশ দেন।তখন তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। কোনো বাস কর্তৃপক্ষ তা অমান্য করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে যোগাযোগ মন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশনা থাকার পরও ছাত্রদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে পরিবহনের কয়েকজন চালক ও হেলপারের সাথে কথা বললে তারা জানান, প্রকৃত ছাত্রছাত্রীদের কে আমরা সব সময় হাফ ভাড়ায় যাতায়াত করিয়ে থাকি। কিন্তু বেশ কিছু তরুণ তরুণী কলেজ ছাত্রছাত্রীর পরিচয় দিয়ে প্রায় সময় লোকাল বাসে চলাচল করে।বেশির ভাগ সময় সকল তরুণ তরুণী স্কুল কলেজে যায় না। অনেক সময় তারা মার্কেট করতে ও আসে।তাছাড়া অনেক তরুণ শুক্রবার ও হাফ ভাড়া দেয়। তবুও মানবিক কারণে আমরা হাফ নিয়ে থাকি। কিন্তু তারা এক সাথে বহুজন এক বাসে ওঠে। তখন আমাদের কি করার থাকে বলেও জানান তারা।
পরিবহন শ্রমিকদের ভাষ্য হচ্ছে, সে যে ছাত্রছাত্রী আমরা সেটা কিভাবে বুঝবো।তাই অনেক সময় বাধ্য হয়ে তাদের পরিচয়পত্র চাইলে সে সব তরুণ তরুণী আমাদের সাথে অহেতুক ঝগড়ায় লিপ্ত হয়।
অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের দাবি হচ্ছে, তাদের জন্য সকল পরিবহন যেন বিনা সত্ত্বে হাফ ভাড়া নেয় সেটা যেন প্রশাসনসহ পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা নির্দেশ দেন।
0Share