রায়পুর প্রতিনিধি: সুপারী চুরির অপরাধে পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ শাওন (১০) কে পিলারের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে একই এলাকার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এমরানের বিরুদ্ধে। এ সময় শিশুটির কাঁধে সুপারীর ছড়া বসিয়ে ছবি তুলে চোর সম্মোধন করে তা সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইজবুক) প্রচার করে। ঘটনা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওই ছাত্রকে নির্যাতনের কবল থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌছে দেয। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার সকালে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার ১০নং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চর ফলোয়ান গ্রামে। নির্যাতনের শিকার ছাত্র মোঃ শাওন চর ফলোয়ান গ্রামে মৃত মুনছুর আলীর ছেলে ও চর ফলোয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিএসসি পরীক্ষার্থী।
খবর পেয়ে সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের চর ফলোয়ান গ্রামের মৃত মুনছুর মিয়ার পরিবারের সাথে একই এলাকার নুর মোহাম্মদ মিয়ার জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। নুর মোহাম্মদ নির্যাতিত শিশুটির ফুফা হন। গত শনিবার সকালে অসহায় পরিবারের শিশু শাওন ওই তর্কিত জমি থেকে সুপারী পাড়তে গেলে সুপারী বাগানের ইজাড়াদার প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ইমরান শিশু শাওনকে আটক করে সিমেন্টের পিলারের সাথে বেঁধে তার কাঁধে সুপারীর ছড়া বসিয়ে নির্যাতন করে। এ সময় স্থানীয় যুবক খান মাহমুদ নামক ফেইজবুক আইডি থেকে শিশুটির নির্যাতনের ছবিটি ফেইজবুকের ভাইরাল করে। এ খবর পেয়ে চর ফলোয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী ঘটনাস্থলে গিয়ে শাওনকে উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় শিশুটির মা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ায় জোরপূর্বক নুর মোহাম্মদ মিয়ার পরিবার আমাদের সম্পত্তি জবরদখল করছেন। ওই জমির সুপারী গুলো ইমরানের কাছে ইজারা লাগিয়েছেন। শিশু সন্তান শাওন সুপারী চুরি করেনি, পকিল্পিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে পিলারের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। আমি সমাজের কাছে বিচার চাই।
অভিযুক্ত ইমরান বলেন, স্থানীয় নুর মোহাম্মদ এর কাছ থেকে সুপারী বাগান ইজাড়া নিয়েছি। সকালে বাগানে এসে দেখি শাওন সুপারী পেড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে হালকা পাতলা মার দেওয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, শাওন আমার বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর মেধাবী ছাত্র ও পিএসসি পরীক্ষার্থী। আজ শনিবার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতি দেখে তার সহপাঠিদের কারণ জিজ্ঞাসা করেল তারা ঘটনাটি জানায়। আমি তাকে বেঁধে রাখার ঘটনাটি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌছে দেই।
এ ঘটনায় রায়পুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার তোফায়েল আহাম্মেদ জানান, এ ঘটনা সম্পর্কে কেউ আমাকে জানায়নি। উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে স্থানীয়ভাবে মিমাংশা করার চেষ্টা করবো।
রায়পুর থানার ওসি একেএম আজিজুর রহামান মিয়া জানান, ঘটনা সম্পর্কে আমি অবহিত নই। বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
0Share