রায়পুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আসেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে কার্যালয়সহ পাউবোর ১০টি ভবন কয়েক বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। ফলে একদিকে যেমন জায়গা দখল হচ্ছে, অন্যদিকে ভবনগুলোর অধিকাংশ দরজা- জানালা ও ভেতরের মালামাল চুরি যাওয়ার পাশাপাশি রাতে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ।
পাউবোর চাঁদপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রায়পুরে পাউবোর শতাধিক একর ভূমি রয়েছে। প্রায় ২০ একর ভূমিজুড়ে আছে কার্যালয় এলাকা, কলোনি, ওয়ার্কশপ ও রেস্ট হাউস।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পাউবোর উপ-বিভাগীয় কার্যালয় ও কার্যালয় সংলগ্ন দুটি বাসভবন, উপজেলা পরিষদ সড়কে একটি বিশ্রামাগার, কলোনি এলাকায় পাঁচটি ভবন ও দুটি ওয়ার্কশপ ভবন পরিত্যক্ত। এগুলোর অধিকাংশই দ্বিতল ভবন। বাসভবন গুলোর অধিকাংশ দরজা-জানালা চুরি হয়ে গেছে। শুধু পাউবোর কার্যালয় ভবনের কয়েকটি দরজা-জানালা আছে। আর জানালা লোহার গ্রিলও চুরি হয়ে গেছে। কার্যালয়ের ভেতরের বৈদ্যুতিক বাতি, পাখাসহ অন্য মালামালও নেই। শহরের পোস্ট অফিস সড়কের পাশে ও জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর পাশে পাউবোর কলোনীর ভেতরে চলে মাদকসেবীদের আড্ডা ও অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রতিহত করতে গেলে প্রভাবশালীরা কর্মকর্তা কর্মচারীদের মারধর করার অভিযোগ রয়েছে। জায়গা দখল ও গাছ এবং দরজা জানালার চুরির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ও থানায় অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে কর্মচারীরা জানান।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, গত দশ বছর ধরে পাউবোর কর্মকর্তারা এ কার্যালয়ে অফিস করেন না। তাই কলোনি, ওয়ার্কশপ ভবন ব্যবহার হয় না। এ সুযোগে একটি মহল শত কোটি টাকার ওই সম্পদ দখলের পাঁয়তারা করছে। দুর্বৃত্তরা ভবনের দরজা-জানালা খুলে নিয়ে গেছে। এ ভবন পরিত্যাক্ত থাকায় মাদকাসক্তরা প্রতিদিন রাতে আড্ডা সহ অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে।
পাউবো কার্যালয় সূত্র জানায়, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি নিষ্কাশন ও বোরো (ইরি) ধানের সেচ সুবিধার জন্য ১৯৭৪ সালে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প (সিআইপি) শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় রায়পুর উপজেলা, হাইমচর, ফরিদগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর, রামগঞ্জ, ও চাঁদপুরের কিছু অংশ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। পাউবোর রায়পুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এস.ও) মোঃ শাহ আলম, সেকশন অফিসার, অফিস সহকারী, সার্ভেয়ার ও ১জন গার্ড। তাদেরকে দিয়ে পুরো উপজেলা পরিচালিত হচ্ছে।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবু রায়হান মোবাইল ফোনে বলেন, পাউবোতে বর্তমানে লোকবল সংকট রয়েছে। ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে রায়পুর কার্যালয়ে দায়িত্বে রয়েছেন। সরকার জনবল না দিলে আমার করার কিছু নেই। দরজা-জানালা চুরির পাশা-পাশি পরিত্যাক্ত ভবন গুলোতে অসামাজিক কার্যকলাপের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
0Share