নিজস্ব প্রতিনিধি: কোথায় বিয়ে কিংবা একটু ভালো পারিবারিক অনুষ্ঠান হচ্ছে শুনলেই হাজির হয় হিজড়ারা। অশ্লীল গাল-মন্দ, হিংস্র আচরণ চলে লাগাতার। চাঁদার জন্য এমন সব কান্ড ঘটিয়েই যাচ্ছে তারা, যেন দেখার কেউ নেই। এমনই চিত্র চোখে পড়ছে শুক্রবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারের বিয়ে অনুষ্ঠানে।
নদী ভাঙা কবলিত ওই পরিবারের বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজনের খবর শুনে চার সদস্যের হিজড়ার দল চাঁদার জন্য ওই বাড়িতে এসে নান অশ্লীল বাষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। ভুক্তভোগী পরিবারের এক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, “এরা এমন সময় আসলো লোকজন সবাই জুমার নামাজ পড়তে মসজিদে গেছে। অনেক বার অনুরোধ করার পরও এরা যাইনি। পরে সাড়ে ৪’শ টাকা দেওয়ার পর গেছে।
এর ফাঁকে এরা যত খারাপ ব্যবহার ছিলো, সব করে আমাদের পাকানো রান্না খেয়ে সব এলো মেলো করে দিয়ে গেছে। টাকা না দিয়ে হয়তো মেহমানদের সামনে সম্মান হারাতে হতো আমাদের।” মাহফুজ নামের এক তরুণ বলেন, “আমার এক আত্মীয়ের বাড়ির বিয়ের অনুষ্ঠানে এরা এসে দেড় হাজার টাকা নিয়ে গেছে। টাকা না দিলে খারাপ কথাতো আছেই, মানুষের সামনে অশ্লীলভাবে নাচানাচি শুরু করে। কারো কোন নিশ্চিয়তা নেই, যে কোন সময় যে কোন বিয়ে বাড়িতে এরা চাঁদাবাজি করার জন্য ঢুকে পড়া এখন চরম আতংক বিরাজ করছে।
অনেকে এটাও বলে, যে এখন বিয়ে অন্যান্য আনুসাঙ্গিক খরচের আগে হিজড়াদের জন্য টাকা প্রস্তুত রাখতে হবে তাহলে।” হিজড়া দলের সদস্যদের এ বিষয়ে ওই ঘটনার মুহুর্তে প্রশ্ন করা হলে একজন উত্তরে বলেন, “মানুষ খায় আমরা কি উপাইয়া থাকমু? আমরা পুলিশ, ডিসি-এসপিরেও ভয় করিনা। কেউ আমাদের কিছু করতে পারবেনা।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো এক ভুক্তভোগী জানান, “এসব হিজড়াদের নের্টওয়াক এখন ব্যাপক বিস্তৃত রূপ নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডেকোরেটরের লোকজনও তাদের খবর দিচ্ছে। পাশাপাশি কেউ কেউ এদের দিয়ে ব্যবসা করে তারাও এ চাঁদার টাকার ভাগিদার হচ্ছে।” মো. আলা উদ্দিন নামের এক সমাজকর্মী জানান, কয়েক দিন আগে কমলনগরে যে খানা জরিপ হয়েছিলো, সেখানে হিজড়াদের কোন নাম-গন্ধও নেই। এরা হাজিরহাট এলাকায় ভাড়া থেকে কমলনগরের প্রতিটি গ্রাম-মহল্লার বিয়ে বাড়িতে গিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করছে। এদেরকে সরকার পুর্নবাসন করেছে, প্রতিবন্ধীদের মতো ভাতাও দিচ্ছে তবুও এদের অসভ্য আচরণ সাধারণ মানুষকে অতিষ্ট করছে।
এ নিয়ে কথা হলে কমলনগর থানার এস আই জাহাঙ্গীর আলম বলেন,
“কয়েক দিন আগে হিজড়াদের এমন অভিযোগে একজন কে আটকের পর বিভিন্ন স্থান থেকে হিজড়ারা থানার সামনে জড়ো হয়।”
বিষয়টি কমলনগর থানার ওসি আলমগীর হোসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন,
“তৃতীয় লিঙ্গের বিরুদ্ধে কোন মামলা করার আইন নেই। কিন্তু এরা যখন ঘটনা সংঘটিত করে তখন থানায় খবর দিলে পুলিশ তাদের তাড়া দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। এজন্য এমন কোন ঘটনা ঘটলে থানাকে বিষয়টি জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
0Share